ভল্টবন্দী টাকার নতুন নোট, ভোগান্তিতে গ্রাহক
Published: 28th, April 2025 GMT
চাহিদার তুলনায় ব্যাংকগুলোকে নতুন নোট দিতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এই সংকট প্রকট হয়েছে। কারণ, সব ধরনের টাকা ও ধাতব মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় গত এপ্রিলের শুরুতে হঠাৎ নতুন নোট বাজারে ছাড়া বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি–সংবলিত নতুন নোট বাজারে আসছে না। তাই মানুষের হাতে, দোকানে ও ব্যাংকে ছেঁড়াফাটা ও পুরোনো ময়লা নোটে সয়লাব হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন নাগরিকেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, নতুন নকশার নোট আগামী মাসে ছাপানো শুরু করবে দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন বা টাঁকশাল। প্রথম ধাপে নতুন নকশার ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হবে। এরপর তা ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে দেওয়া হবে।
এদিকে আগে ছাপানো হয়েছে, এমন নোট বাজারে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার সমমূল্যের কাগুজে নোট ছাপানো আছে। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে তাঁদের অনেকেই নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নতুন নোট নেওয়া একটা দীর্ঘদিনের রীতি। এটা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। একদিকে ছাপানো টাকা ব্যবহার না করে অপচয় করা হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ছে।
বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত লাখ লাখ নোট এখনো বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে পড়ে আছে। একসঙ্গে সব নোট বাতিল করে নতুন নোট ছাপানোর সক্ষমতা টাঁকশালের নেই। মানুষের ভোগান্তি কমাতে যেসব নোট ছাপানো আছে, সেগুলো বাজারে ছাড়া উচিত জিয়াউদ্দীন আহমেদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টাঁকশালএ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নির্দেশ এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই এ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকেই আসতে হবে।
গ্রাহক ভোগান্তি
রাজধানীর মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়সহ সারা দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০টি কার্যালয় রয়েছে। নগদ টাকার প্রয়োজন হলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিদ্যমান ব্যবস্থার আওতায় এসব কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করে। যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয় নেই, সেখানে সোনালী ব্যাংক সেই দায়িত্ব পালন করে। সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে থাকা নিজস্ব হিসাবের বিপরীতে নতুন টাকা নিয়ে থাকে ব্যাংকগুলো। কখনো কখনো ছেঁড়াফাটা নোট পরিবর্তন করে ও ধার হিসেবেও নগদ টাকা সংগ্রহ করে ব্যাংকগুলো। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুরোনো নোটের পাশাপাশি নতুন নোট বাজারে সরবরাহ করে থাকে।
শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ নোট নিয়ে বিতর্ক ওঠায় গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চিঠি দিয়ে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যেসব নতুন নোট গচ্ছিত রয়েছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণের কথা বলা হয়। এরপর থেকে নতুন নোট বিনিময় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় এবং বাজারে নতুন নোটের সংকট দেখা দেয়।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শফিউল আলম থাকেন রাজধানীর মিরপুরে। গত মঙ্গলবার বাসার পাশের বিসমিল্লাহ ভ্যারাইটিজ স্টোরে ৪২০ টাকা কেনাকাটা করে এক হাজার টাকার নোট দেন। বিক্রেতা তাঁকে দুটো ২০০ টাকার নোট, একটি ১০০ টাকা, একটি ৫০ টাকা, একটি ২০ টাকা ও একটি ১০ টাকার নোট ফেরত দেন। এর মধ্যে একটি ২০০ টাকার নোট ও ২০ টাকার নোট দুটি ছিল প্রায় অচল। দোকানদার তাঁকে আশ্বাস দেন, পরের মাসে ছেঁড়া টাকা নিয়ে এলে পরিবর্তন করে দেবেন। এখন এ ছাড়া কোনো উপায় নেই।
বিসমিল্লাহ ভ্যারাইটিজ স্টোরে দিনে প্রায় দেড় লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয় জানিয়ে ব্যবস্থাপক মকবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগে ব্যাংক থেকে প্রতিসপ্তাহে নতুন খুচরা নোট আনা যেত। গত মাস থেকে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক থেকে পুরোনো নোট যা মিলছে, সেগুলোর বেশির ভাগই ছেঁড়াফাটা। এসব নোট গ্রাহককে দিলে তাঁরা নিতে চান না।
শুধু ব্যাংক নয়, ব্যাংকের এটিএম বুথগুলো থেকেও এখন বেশ পুরোনো ও প্রায় অচল নোট বের হচ্ছে। এটিএম বুথে টাকা ফেরত দেওয়ার সুযোগ না থাকায় এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকেরা। এ বিষয়ে আজমল হোসেন নামের ঢাকা ব্যাংকের এক গ্রাহক প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা ব্যাংকের কার্ড দিয়ে ওয়ান ব্যাংকের এটিএম থেকে ২০ হাজার টাকা তুলেছি। এর মধ্যে তিনটি এক হাজার টাকার নোট প্রায় অচল। এখন এসব নোট ফেরত দিতে গেলেও ব্যাংকগুলো নিতে চাচ্ছে না।
নতুন নোট আসবে কবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন নকশার নোট ছাপাতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠিত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে বঙ্গবন্ধুর ছবি–সংবলিত টাকার নোটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। গত ডিসেম্বরে নতুন নকশার নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী মে মাসে টাঁকশালে নতুন নকশার নোট ছাপানো শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে একসঙ্গে তিনটি নোটের বেশি ছাপানোর সক্ষমতা নেই টাঁকশালের। এ জন্য প্রথম ধাপে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিভিন্ন মূল্যমানের ১৫০ কোটি পিস নতুন টাকার চাহিদা রয়েছে। তবে টাঁকশাল ছাপাতে পারে ১২০ কোটি পিস। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টাঁকশাল বিভিন্ন মূল্যমানের ১০৫ কোটি পিস নতুন নোট ছাপে। সাধারণত একটি নোট চার থেকে পাঁচ বছর স্থায়ী হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন সিদ্ধান্ত নিলেও বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ নোট এখনই বাজার থেকে সরানো যাবে না। নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়ার পর পুরোনো সব নোট বাজার থেকে তুলে নিতেও পাঁচ থেকে সাত বছর লেগে যাবে।
ছাপানো টাকা কত
বাংলাদেশে এখন ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার কাগুজে নোট ব্যবহৃত হচ্ছে। পাশাপাশি ১, ২ ও ৫ টাকার ধাতব মুদ্রাও বাজারে রয়েছে। সব ধরনের মুদ্রায় বঙ্গবন্ধুর ছবি রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বাজারে থাকা টাকার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা ছিল মানুষের হাতে। ব্যাংকের ভল্টে ছিল ২৬ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ব্যাংকগুলোর ৭৬ হাজার ২২০ কোটি টাকা জমা ছিল।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও টাঁকশালের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জণগণের করের অর্থে কাগজ–কালি কিনে বিভিন্ন মূল্যমানের টাকার নোট ছাপানো হয়। বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত লাখ লাখ নোট এখনো বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে পড়ে আছে। একসঙ্গে সব নোট বাতিল করে নতুন নোট ছাপানোর সক্ষমতা টাঁকশালের নেই। তাই বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট চাইলেই হুট করে বাতিল করা যাবে না। এ অবস্থায় মানুষের ভোগান্তি কমাতে যেসব নোট ছাপানো আছে, সেগুলো বাজারে ছাড়া উচিত। নতুন নকশার নোট বাজারে এলে ধীরে ধীরে পুরোনো নোটগুলো তুলে নিতে হবে। সাধারণত একবার ছাপানো নোট সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ বছর ব্যবহার করা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নত ন ন ট ব কর মকর ত ব যবস থ গ র হক সব ন ট সরক র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে
আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।
এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।
ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন
সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’
এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টদেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।
ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।
আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।
‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’
আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে