লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন করবে ওয়ালটন, তৃতীয় প্রান্তিকে কমেছে মুনাফা
Published: 28th, April 2025 GMT
লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন করবে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। সম্প্রতি কোম্পানির ৪৪তম পর্ষদ সভায় এই ব্যাটারি উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ঘোষণায় এই তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি। সেই সঙ্গে তারা আরও জানিয়েছে, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানির মুনাফা কমেছে।
ডিএসইর ওয়েবসাইটের ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, ওয়ালটন উচ্চ মানের লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদন করতে চায়। এর মধ্য দিয়ে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চায় তারা।
আরও বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ওয়ালটন ১১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে। তারা আশা করছে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে এই কারখানায় উৎপাদন হবে। এই কারখানা থেকে প্রতিবছর ১৪৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ব্যাটারি বিক্রি করা যাবে।
লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি হলো এক প্রকার রিচার্জেবল ব্যাটারি। অন্যান্য রিচার্জেবল ব্যাটারির তুলনায় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির শক্তি ও আয়ুষ্কাল বেশি। বাংলাদেশে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও সৌর বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ডিজিটাল ক্যামেরা, স্মার্ট ওয়াচ ও পোর্টেবল গেমিং কনসোল এই ব্যাটারিতে চলে। বিভিন্ন প্রকার ও ক্ষমতার লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এখন বাজারে পাওয়া যায়।
২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের টেলিকম খাতের বিটিএসে ব্যবহারের জন্য লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদনে চুক্তি স্বাক্ষর করে হুয়াওয়ে ও ওয়ালটন। এ ছাড়া বাংলাদেশ লিথিয়াম ব্যাটারি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি অত্যাধুনিক কারখানা স্থাপন করেছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে কমেছে মুনাফা২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির। চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৫ থেকে মার্চ’২৫) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ১২ টাকা ৯৪ পয়সা আয় হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ১৩ টাকা ৯৩ পয়সা আয় হয়েছিল। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৯৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ২৫ টাকা ১৭ পয়সা আয় হয়েছিল।
প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল মাইনাস ১ টাকা ৮৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২২ টাকা ৮৮ পয়সা।
গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল থ য় ম আয়ন ব য ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।