লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন করবে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। সম্প্রতি কোম্পানির ৪৪তম পর্ষদ সভায় এই ব্যাটারি উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ঘোষণায় এই তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি। সেই সঙ্গে তারা আরও জানিয়েছে, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানির মুনাফা কমেছে।

ডিএসইর ওয়েবসাইটের ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, ওয়ালটন উচ্চ মানের লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদন করতে চায়। এর মধ্য দিয়ে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চায় তারা।

আরও বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ওয়ালটন ১১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে। তারা আশা করছে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে এই কারখানায় উৎপাদন হবে। এই কারখানা থেকে প্রতিবছর ১৪৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ব্যাটারি বিক্রি করা যাবে।

লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি হলো এক প্রকার রিচার্জেবল ব্যাটারি। অন্যান্য রিচার্জেবল ব্যাটারির তুলনায় লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির শক্তি ও আয়ুষ্কাল বেশি। বাংলাদেশে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও সৌর বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ডিজিটাল ক্যামেরা, স্মার্ট ওয়াচ ও পোর্টেবল গেমিং কনসোল এই ব্যাটারিতে চলে। বিভিন্ন প্রকার ও ক্ষমতার লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এখন বাজারে পাওয়া যায়।

২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের টেলিকম খাতের বিটিএসে ব্যবহারের জন্য লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদনে চুক্তি স্বাক্ষর করে হুয়াওয়ে ও ওয়ালটন। এ ছাড়া বাংলাদেশ লিথিয়াম ব্যাটারি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি অত্যাধুনিক কারখানা স্থাপন করেছে।

তৃতীয় প্রান্তিকে কমেছে মুনাফা

২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির। চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২৫ থেকে মার্চ’২৫) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ১২ টাকা ৯৪ পয়সা আয় হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ১৩ টাকা ৯৩ পয়সা আয় হয়েছিল। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৯৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ২৫ টাকা ১৭ পয়সা আয় হয়েছিল।

প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ ছিল মাইনাস ১ টাকা ৮৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২২ টাকা ৮৮ পয়সা।

গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল থ য় ম আয়ন ব য ট র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।

ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।

১৫ দফা প্রস্তাবনা

সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।

১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ