বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
Published: 28th, April 2025 GMT
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন। আগামী ৯ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ করবে বিএনপির ৩ সহযোগী সংগঠন।
আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
কোথায় কোথায় কর্মসূচি
প্রথম কর্মসূচি চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগে: আগামী ৯ মে থেকে ১০ মে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগে। এর মধ্যে ৯ মে কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনায় সেমিনার, ১০ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।
দ্বিতীয় কর্মসূচি খুলনা ও বরিশাল বিভাগে: ১৬ থেকে ১৭ মে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে। এর মধ্যে ১৬ মে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনায় সেমিনার, ১৭ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।
তৃতীয় কর্মসূচি রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে: বগুড়া ২৩ থেকে ২৪ মে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে। এর মধ্যে ২৩ মে কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনায় সেমিনার, ২৪ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।
চতুর্থ কর্মসূচি ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে: ২৭ থেকে ২৮ ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে। এরমধ্যে ২৭ মে তারুণ্যের অর্থনৈতিক মুক্তি ও রাজনৈতিক ভাবনায় সেমিনার এবং ২৮ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।
মোনায়েম মুন্না বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি অভূতপূর্ব ও জনসম্পৃক্ত নির্দেশনায়, জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে গ্রহণ করেছে একটি সমন্বিত ও গতিশীল কর্মসূচি। আমাদের লক্ষ্য, তরুণদের ক্ষমতায়ন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং তৃণমূল পর্যায়ে সার্বজনীন উন্নয়নের বাস্তবসম্মত মডেল গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি বিভাগে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করতে যাচ্ছি। প্রথম দিন একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, যার শিরোনাম ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’। এই সেমিনারে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে, গণতন্ত্রকামী সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উদীয়মান চিন্তাবিদ, তরুণ বক্তা ও উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন।
আলোচনায় উঠে আসবে- কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, নগরায়ন, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকার এবং তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণ।
যুবদলের সভাপতি মুন্না বলেন, এই প্ল্যাটফর্ম হবে একটি উন্মুক্ত ও যুক্তিনির্ভর সংলাপের ক্ষেত্র, যেখানে মতবিনিময় হবে গঠনমূলক, পর্যালোচনামূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী। সংলাপের ভিত্তি হবে, বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলসমূহ ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রদত্ত দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন।
তিনি আরও বলেন, কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে, যার উদ্দেশ্য একটি প্রাণবন্ত, উদ্দীপনাময় পরিবেশে তরুণদের সরব উপস্থিতি তথা ঐক্য, প্রত্যয় ও আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ নিশ্চিত করা। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেন আর কখনো কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার যেন দ্রুত বিচার নিশ্চিত হয়, সার্বভৌম বাংলাদেশে যেন গণমানুষের স্বাধীনচেতা আকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটে, সাম্য ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের যেন পরিবর্তন ঘটে-সেটিই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য।
যুবদল সভাপতি বলেন, আমাদের বিশ্বাস, বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠনের এই আয়োজন কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। বরং এটি একটি প্রজন্মের সঙ্গে সংলাপ গড়ার সেতুবন্ধন, একটি জনভিত্তিক, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর। এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে জনগণের মতামত ও চিন্তা-ভাবনা সংগ্রহ করা হবে, যার ভিত্তিতে আমরা আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলোকে আরও জনকল্যাণমুখী ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিমার্জিত করতে পারব। তরুণদের একাগ্রতা, সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ য বদল ছ ত রদল ভ বন য় স ম ন র ব এনপ র আম দ র স গঠন য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।
আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছেপ্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।
তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩