পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন
Published: 28th, April 2025 GMT
কাশ্মীরে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
রোববার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।’
প্রতিবেদনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া ব্রিফিংয়ের সঙ্গে জড়িত চার কূটনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, কাশ্মীরে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এসব প্রচেষ্টা মূলত শান্তি আনার জন্য নয়, বরং সামরিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির অংশ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি “সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস করার” এবং “কঠোর শাস্তি” দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেননি।
নিউইয়র্ক টাইমস আরও জানায়, পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরে তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজতে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পাল্টা হুঁশিয়ার দিয়েছেন। তিনি বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। যদি মোদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব। পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী এবং প্রয়োজন হলে উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসবাদে সহায়তার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তারা জানান, সর্বশেষ এই হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন জানিয়েছেন, মোদি সরকারের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। এর অন্যতম কারণ ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত।
এদিকে হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি এবং হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকার পক্ষে খুব কম প্রমাণ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ত ত
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের মধ্যাঞ্চলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘আঘাত’ করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মেয়র।
যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র পরবর্তী সময় বলেন, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার—কোনোটাই করতে পারছেন না।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল ৩৪৫ পার্ক এভিনিউ এবং ইস্ট ফিফটি ওয়ান স্ট্রিটের চারপাশ এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন। যদিও তাঁর নাম-পরিচয় এখনো জানানো হয়নি।
এক্সে পোস্ট দিয়ে পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিসচ লিখেন, এ মুহূর্তে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, একটি অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পাশেই ছিলাম। তিনি (বন্দুকধারী) একের পর এক ফ্লোরে ঘুরছিলেন।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানান, ঘটনাটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির একটি কার্যালয়ে ঘটেছে।
ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স জড়ো করা হয়েছে। আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক ও উৎসুক জনতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
ম্যানহাটানের ওই এলাকায় বেশকিছু পাঁচ তারকা হোটেল এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর রয়েছে।