দেশপ্রেমিকরা পালায় না: জামায়াত আমির
Published: 28th, April 2025 GMT
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দেশকে, মানুষকে ভালোবাসলে কেউ পালিয়ে যায় না। জামায়াত নেতারা তা প্রমাণ করেছেন’। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মাওলানা আব্দুস সুবহান রহ.: তৃণমূল থেকে শীর্ষে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন জামায়াত আমির।
শফিকুর রহমান বলেন, মাওলানা আব্দুস সুবহান চাইলে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তার জন্মভূমি ছেড়ে যেতে রাজি হননি। দেশপ্রেমে তিনি ছিলেন অটল। জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন। বন্ধুরা তাকে বাংলাদেশে যেতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে গেলে কী হবে?’ তার বন্ধুরা বলেছিলেন, ‘আপনারও একই অবস্থা হতে পারে’। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘মৃত্যুর কাছে দাঁড়িয়ে বলব আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেসব মিথ্যা’। মীর কাসেম আলী দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতেন বলেই ফিরে এসেছিলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, মাওলানা আব্দুস সুবহানের মতো উদারতা ও সাহসিকতা অর্জন করতে হবে। জাতির স্বার্থে দল-মত নির্বিশেষে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ব্যক্তিগতভাবে কেউ পরাজিত হতে পারে, কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে এ জাতি বিজয়ী হবে।
আবদুস সুবহান সম্পর্কে শফিকুর রহমান বলেন, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থায় তিনি কনডেম সেলে ছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে ভয় বা অস্থিরতা ছিল না। জেলের অন্য বন্দিরাও তাকে সম্মান করতেন এবং বলতেন, ‘এমন একজন মানুষকে জেলে দেখতে কষ্ট হয়।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, জুলাই বিপ্লবের বিতাড়িত সরকার আব্দুস সুবহানকে অপমানিত করতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি করেছিল। আজ সেই আওয়ামী লীগই অপমানিত হয়ে দেশ থেকে পালিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোলাম কবির হাক্কানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড.
মাওলানা আব্দুস সুবহান ছিলেন পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জামায়াতের নায়েবে আমির। ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৮৪ বছর।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র জ ম য় ত আম র র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ
রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’
এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ।