প্রিমিয়ার লিগের হিসাব চুকেবুকে গেছে, লিভারপুল শিরোপা জিতে নেওয়ার পর দ্বিতীয় থাকতে পারলেই খুশি আর্সেনাল। তবে উত্তর লন্ডনের ক্লাবটির সামনে এখন ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জয়ের হাতছানি। ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তাদের নারী দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে। হারিয়েছে ফরাসি ক্লাব লিওঁকে। এবার পালা ছেলেদের। আজ রাতে নিজেদের উঠানে তাদের সামনেও ফরাসি ক্লাবের চ্যালেঞ্জ। এমিরেটস স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে তারা আতিথেয়তা দেবে পিএসজিকে।
প্রিয় এই মাঠেই শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-০ গোলে বধ করেছিল আর্সেনাল। ডেকালান রাইসের জোড়া ম্যাজিক্যাল ফ্রি কিক অবাক করে দিয়েছিল ফুটবলবিশ্বকে। সেই রাইসের সামনেই আজ প্রতিপক্ষ হাকিমি-মারকুইনহোসরা।
ইতিহাস বলে, ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এর আগে যে পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছিল দুটি দল, তার কোনোটিতেই হারেনি গানাররা। উল্টোদিকে পিএসজি তার ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ছয়টি অ্যাওয়ে ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে! শেষ ম্যাচে তারা কোয়ার্টার ফাইনালের সেকেন্ড লেগে ইংলিশ ক্লাব বার্মিংহামে এসে ৩-২ গোলে অ্যাস্টন ভিলার কাছে হেরেছিল। তাই ‘ইংলিশ জড়তা’ আর আর্সেনালের ‘রাইসের’ ব্যাপারে সতর্ক থেকেই আজ মাঠে নামতে হচ্ছে পিএসজিকে। আর্সেনালের যে লৌহ রক্ষণ রিয়াল ভাঙতে পারেনি, সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই মাঠে নামছে পিএসজি।
পিএসজির স্প্যানিশ কোচ লুই এনরিকের হাতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে কার্যকর খেলোয়াড়ের নাম উসমান দেম্বেলে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত সাতটি গোল আর তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন এই ফরাসি উইঙ্গার। এই আসরে মোট ১৯০টি ড্রিবল দেখিয়েছেন পিএসিজির খেলোয়াড়রা। এনরিক মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর ১০ বছর আগে মেসিদের নিয়ে সেই তিকিতাকার ছন্দটাও। ৪-৩-৩ তাঁর প্রিয় ফরমেশনে রুইজ, ভিতিনহা, নেভিসদের নিয়ে আর্সেনালের রক্ষণ এলোমেলা করে দিতে চাইবেন।
আর আর্সেনাল কোচ আর্তেতা চাইবেন ফর্মে থাকা বুকায়ো সাকাকে দিয়ে পিএসজির গোলপোস্ট ভেদ করতে। এই মৌসুমে ৯টি গোল আর ছয়টি অ্যাসিস্ট করে সেরা ছন্দে আছেন এ ইংলিশ উইঙ্গার। বাঁ পাশে মার্তিলেন্নি আর সেন্টারে ত্রোসার্তোকে নিয়ে আর্সেনালের আক্রমণ ভাগ বেশ ধারালো। তবে এমিরেটসের গ্যালারি আজ নিশ্চিতভাবেই তাকিয়ে থাকবে ডেকালান রাইসের দিকে। শোনা যাচ্ছে, ইদানীং নাকি তিনি অনুশীলনে বাড়তি সময় নিয়ে ফ্রিকিকে মনোনিবেশ করছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর স ন ল প এসজ আর স ন ল র প এসজ
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।