বগুড়ায় অটোরিকশা চালক আজগর আলী পিয়াল হত্যার ঘটনায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক মো. আবু হানিফ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়‌টি নি‌শ্চিত করেছেন বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বগুড়া সদর উপজেলার ছোট কুমিড়া এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হান্নান, একই এলাকার দুলু খানের ছেলে রাশেদ খান। তিন বছ‌রের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হ‌লেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নয়াপাড়া এলাকার নুরুন্নবী মুন্না।

আরো পড়ুন:

জামিন পেলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস

চট্টগ্রামের আদালত থেকে ২ আসামির পলায়ন

মামলার বরাত দিয়ে বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন জানান, বগুড়া শহরের নিশিন্দারা মধ্যপাড়ার মহিদুল ইসলাম খোকার ছেলে পিয়াল ২০২০ সালের ২১ মার্চ অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। ২৮ মার্চ বিকালে শহরতলীর বড় কুমিড়া হিন্দুপাড়ার কবরস্থানে তার গলিত লাশ পাওয়া যায়। লাশ শনাক্তের পর তার বাবা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত চলাকালে হত্যায় জড়িত সন্দেহে রাশেদ ও হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দুজন হত্যার দায় স্বীকার করেন। তারা জানান, গত ২১ মার্চ রাতে নেশার প্রলোভ‌নে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে পিয়ালকে তার অটোরিকশা ভাড়া করে বড় কুমিড়া গ্রামে বিএড কলেজের পেছনে বাঁশবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা লোপেন্টা নামক মাদক সেবন করে। এক পর্যায়ে তারা ইট দিয়ে পিয়ালের মাথায় আঘাত করলে তিনি মারা যান। তারা লাশ পাশের পাকা কবরে ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান। ওই রাতেই রিকশাটি ঘোড়াঘাটে নিয়ে বিক্রির জন্য নুরুন্নবী মুন্নার কাছে রেখে আসেন। এরপর তা‌দের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রিকশা ক্রেতা মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কোর্ট ইন্স‌পেক্টর আরো জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আদালত সকল সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়ে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় অনুযায়ী আসামিদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 
 

ঢাকা/এনাম/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ