বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
Published: 30th, April 2025 GMT
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের বকচর এলাকার কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সমিতির নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মোহাম্মদ রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুলকে অপসারণে সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। আজ পদত্যাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নেন তাঁরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কার্যালয়ের ভেতর থেকে ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি সেখানে হামলার চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা তা প্রতিহত করেন এবং একজনকে চাকুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আরিফুল ইসলাম পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতির কাছে জমা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল বের করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর একজন দোসর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের চেয়ারে থাকতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগের কর্মসূচি নেয়। আমরা শুনেছি রিয়াদ পদত্যাগ করেছে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রিয়াদকে পদত্যাগ করানো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। স্বৈরাচারী দোসররা ৫ আগস্টের পর কোনো দপ্তরের চেয়ারে থাকবে না, সেটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্ররা গিয়ে মব সৃষ্টি করে সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় এক যুবক চাকু নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তখন ছাত্ররা তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এরপর সেই যুবককে অস্ত্র আইনের মামলায় বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ফ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।