ভয়াবহ মাত্রায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় ইসরায়েলে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হযেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

বুধবার জেরুজালেমের কাছে মহাসড়কের উপরে ঘন ধোঁয়া উড়ছিল। ওই সময় দমকলকর্মীরা দাবানল নিয়ন্ত্রণে ছুটে যায়। দাবানল নিয়ন্ত্রণ চেষ্টাকালে বেশ কয়েকজন আহত হন। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে সাহায্যের জন্য সেনা মোতায়েন করতে হয়েছে।

ইসরায়েলের উদ্ধার সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঝুঁকিতে রয়েছে শত শত বেসামরিক মানুষ।

এমডিএ জানিয়েছে, তারা প্রায় ২৩ জনকে চিকিৎসা প্রদান করেছে, যাদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের বেশিরভাগই ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট এবং পুড়ে যাওয়ার কারণে ভুগছেন। আহতদের মধ্যে দুজন গর্ভবতী মহিলা এবং এক বছরের কম বয়সী দুটি শিশু ছিল।

সতর্কতার স্তর সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এমডিএ।

মোদিইন শহরের কাছাকাছি থেকে পাহাড়ের ধারে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী যুবাল আহারোনি বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক, কারণ আমরা আবহাওয়ার খবর জানতাম। আমরা জানতাম যে এটি ঘটবে, তবুও আমাদের মনে হচ্ছে তারা প্রচুর পরিমাণে পানি ফেলতে পারে এমন বড় বিমানগুলোর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি ছিল না।”

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “পশ্চিমা বাতাস আগুনকে সহজেই (জেরুজালেমের) উপকণ্ঠের দিকে ঠেলে দিতে পারে - এমনকি শহরেও।”

তিনি বলেছেন, “আমাদের যতটা সম্ভব দমকলের ইঞ্জিন আনতে হবে এবং বর্তমান অগ্নিনির্বাপণ সীমার বাইরেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে.

.. আমরা এখন কেবল স্থানীয় জরুরি অবস্থা নয়, একটি জাতীয় জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি। এই মুহূর্তে অগ্রাধিকার হল জেরুজালেমকে রক্ষা করা।”

এক সপ্তাহ আগে দাবানলে বিধ্বস্ত জেরুজালেম-তেল আবিব মহাসড়কটিতে দাবানল আবারও ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে এবং পথের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে তাদের আবাসস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ