দেশ রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় অতিক্রম করছে: ফখরুল
Published: 1st, May 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “ফ্যাসিবাদের পতন হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। দেশ রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় অতিক্রম করছে।”
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দল ও জনগণকে অবহেলা করে, এমন কোনো চুক্তি করবেন না, যে চুক্তি দেশের বিরুদ্ধে যাবে।
সংস্কারকাজ শেষ করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, বিভাজন নয়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে দেশ।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা অনেক বছর একটা ডাইনির হাতে জিম্মি থেকেছি। কোনো ছেলে-মেয়ের পরিবারে বিএনপির গন্ধ থাকলেই তাদের আর চাকরি হতো না। ব্যবসাতেও একই অবস্থা করেছে তারা। দীর্ঘ সংগ্রাম আর অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা তার হাত থেকে রেহাই পেয়েছি। তারপরও ডাইনি হাসিনা পাশের দেশ ভারতে বসেই আমাদের গুঁতোগুঁতি করে চলেছেন। দেশ থেকে পালিয়েও জনগণকে শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না সে ভয়াবহ ডাইনি।
আয়নাঘর সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যাদের ভয় করেছে বা আওয়ামী যাদের লীগ নিজেদের জন্য হুমকি মনে করেছে, তাদেরকেই তারা গুম করেছে। ১৭০০ মানুষকে গুম করেছে তারা। গুম হওয়া বেশিরভাগ মানুষেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আর যাদের খোঁজ পাওয়া গেছে, তারাও অন্তত ৭ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত আটকে থেকেছেন। সিলেটের এমপি ও প্রতাপশালী নেতা ইলিয়াসের এখনো খবর পায়নি তার পরিবার।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দল বিএনপি। অন্যায় করবেন না, যদি করেন তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে। কেউ অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেবেন। দল আপনাদের, ধানের শীষ আপনাদের, রক্ষা করার দায়িত্বও তাই আপনাদেরই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) শিল্পীদের দেশাত্মবোধক গান ও গণসংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ।
বিভিন্ন জেলা ও শহর থেকে আসা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাথায় ছিল লাল, সবুজ, সাদা ও কালো টুপি, পরনে ছিল টি-শার্ট।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়া পল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ঢাকা/এএএম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে: তারেক রহমান
করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জনগণের কাছ থেকে আসতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান মে দিবসে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে ‘করিডর’ নিয়ে কথা বলেন তারেক রহমান। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ স্থাপন নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ মনে করে, করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের কাছ থেকে। সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক বিশ্বের দেশে দেশে এটাই নিয়ম, এটাই রীতি।’
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এই সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে লিপ্ত মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার নাকি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিন্তু জনগণকে জানায়নি। এমনকি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি।
দেশের জনগণকে না জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না কিংবা নেওয়া উচিত কি না, এই মুহূর্তে সেই বিতর্ক তুলতে চান না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট—বিদেশিদের স্বার্থ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার আগে দেশের জনগণের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে।
ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর এ বছর রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারেক রহমান। তবে তিনি বলেন, রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার চাল ও তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চাল–তেলের দাম বেড়েছে কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। তাহলে জনগণ এখন তাদের এমন ভোগান্তির কথা কার কাছে, কোথায় কীভাবে বলবে?
নয়াপল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে সমাবেশে নেতা-কর্মীদের একাংশ। ঢাকা, ১ মে