ইমাম রইস হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ
Published: 2nd, May 2025 GMT
গাজীপুরের ইমাম মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের বক্তব্য রহস্যজনক অভিযোগ করে ও হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা।
শুক্রবার (২ মে) বাদ জুমা রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট মাজার মসজিদ থেকে ঢাকা মহানগরের (উত্তর-দক্ষিণ) উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
রইকে ছাত্রসেনার সাবেক নগর দক্ষিণের সভাপতি দাবি করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘রইসের হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। ২৬ এপ্রিল গাজীপুর থেকে অসংখ্য আশেকে রাসূলকে নিয়ে ঢাকার সমাবেশে এসেছিল মাওলানা রইস উদ্দিন। সেজন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মতাদর্শ কারণে তাকে নিমর্মভাবে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট। কিন্তু তারপরও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার তো করেনি বরং খুনিদের পক্ষে সাফাই গেয়ে রহস্যজনক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জড়িতদের রক্ষার চেষ্টা করছেন।’
তারা বলেন, যারা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে, যারা এ দেশের মধ্যে ইসলামের নাম দিয়ে বিভিন্ন মাজারে ভাঙচুরে জড়িত। আমরা তাদের বলে দিতে চাই, আমাদের সুন্নিরা বার বার রক্ত দিয়েছে, প্রয়োজনে সুন্নিরা রইস উদ্দিনের জন্য আবারও রক্ত দিতে রাজপথে নামবে। দ্রুত সময়ে আমাদের ভাইয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমাদের ঠিকানা হবে রাজপথ।
গাজীপুরে মব সৃষ্টি করে তরুণ আলেমে দ্বীন ও সংগঠক মাওলানা রইস উদ্দিনকে নির্যাতন ও বিনা চিকিৎসায় কারা হেফাজতে মৃত্যুর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান নেতারা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, পীর মাহবুব উল্লাহ, মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম কাজল, ছাত্রসেনার সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন।
উপস্থিত ছিলেন শাহেদুল আলম চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ তৈয়ব আলী, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন নুরী, অধ্যক্ষ আবু নাসের মোহাম্মদ মুসা, মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, মো আবদুল খালেক, মোহাম্মদ নোমান, মোহাম্মদ আবুল ফজল, মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন ফয়সাল, হাফেজ আলী আকবর, মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ অলিউল্লাহ মোল্লা, শেখ ফরিদ, বুলবুল আহমদ মোমেনশাহী প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সুপ্রিম কোর্ট মাজার মসজিদ থেকে বের হয়ে শাপলা চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা ও মব সন্ত্রাস: আইন উপদেষ্টা
হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা ও মব সন্ত্রাসকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে মনে করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তবে মিথ্যা মামলা থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন। গত এক বছরে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব কাজ হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে সেসব তুলে ধরেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিথ্যা মামলা নিয়ে আমার বিরক্তি ও আপত্তি বহুবার প্রকাশ করেছি। বারবার আপনাদের বলি, আমাদের সরকারের আমলে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক যে দুটি ঘটনা ঘটেছে, একটা হচ্ছে মিথ্যা মামলা, মামলা হতে পারে, কিন্তু মিথ্যাভাবে লোককে ফাঁসানো, মানে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা; আরেকটা হচ্ছে জব জাস্টিস। মব সন্ত্রাস আমি বলি। এই দুইটা আমাদের খুবই পীড়িত করে।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলা ঠেকানোর জন্য বা এই মামলা থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধন করা হয়েছে। পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা না করে একটা প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে দেবেন। আদালত যদি দেখেন, এখানে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, কিন্তু ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য আছে, বাকিদের বিরুদ্ধে নেই, তাহলে আদালত তখনই ছাড় করে দিতে পারবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কাজের জন্যও আইন মন্ত্রণালয়কে দোষারোপ করা হয় উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্য কারও ব্যর্থতার জন্য আমাদের দোষারোপ করবেন না। আমরা টিম হিসেবে কাজ করি এটা সত্যি, কিন্তু এক মন্ত্রণালয় অন্য মন্ত্রণালয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’
নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, জাস্ট অপেক্ষা করেন, কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে।
হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার
হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা বলেন, পর্যালোচনার পর ১৫ হাজারের বেশি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সাইবার আইনের অধীনে ৪০৮টি ‘স্পিচ অফেন্স’–সংক্রান্ত মামলা এবং জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে করা ৭৫২টি হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের কারণে কয়েক লাখ রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও স্বাধীন মতের মানুষ হয়রানি থেকে রেহাই পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা তাঁর মন্ত্রণালয়ের এক বছরের কাজের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে আইনটিকে ন্যায়বিচারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ জারি, দেওয়ানি কার্যবিধি সংশোধন, ফৌজদারি বিধি সংশোধন, মামলাপূর্ব বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার বিধান সংযোজন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সংশোধন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালায় সংশোধন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি, বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা সংশোধন, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা, ২০২৫ এবং জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের আইন ও বিচার বিভাগে পদায়নে বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন উপদেষ্টা।