লাইপজিগ ৩: ৩ বায়ার্ন মিউনিখ

ম্যাচের ৮৩ মিনিটে লিরয় সানের গোলের পরই শুরু হয়ে যায় বায়ার্ন মিউনিখের উদ্যাপন। তবে মাঠের উদ্যাপনে নয়, সবার চোখ ছিল স্ট্যান্ডে। নিষেধাজ্ঞার কারণে লাইপজিগের বিপক্ষে ম্যাচটা যে সেখানেই বসেই দেখছিলেন হ্যারি কেইন। ক্যামেরাও তাই দ্রুত মাঠ থেকে ঘুরে চলে গেল স্ট্যান্ডে। সেখানেই উদ্যাপনে মেতেছেন কেইন।

যে উদ্যাপনের জন্য গত ১৬ বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার। এই উদ্যাপনের লক্ষ্যে এর আগে ৬ বার ফাইনাল খেলে হেরেছেন প্রতিবার। মনে হচ্ছিল, সেই অপেক্ষার বোধ হয় ইতি ঘটল। অবশেষে ‘অভাগা’ কেইন বোধ হয় জিততে যাচ্ছেন নিজের প্রথম শিরোপা।

কেইনের সেই ট্রফি নিশ্চিত ধরে নিয়ে প্রথম আলোর ছাপার পত্রিকায় প্রকাশের জন্য দেওয়া জাকের আলীর নির্ধারিত ছবিটিও সরিয়ে ফেলা হলো। কেইনের প্রথম শিরোপা জয় যে বিশেষ কিছু! কিন্তু সব প্রস্তুতিতে পানি ঢেলে দিলেন ইউসুফ পুলসেন।

যোগ করার সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল করে বসলেন এই লাইপজিগ তারকা। ম্যাচ শেষ হলো ৩-৩ সমতায়। শিরোপা জিতেও শেষ পর্যন্ত জেতা হলো না কেইনের। আনুষ্ঠানিক শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরেকটু।

আজকের ড্রয়ের পর ৩২ ম্যাচে বায়ার্নের পয়েন্ট ৭৬। এক ম্যাচ কম খেলে লেভারকুসেনের পয়েন্ট ৬৭। অর্থাৎ এখন বায়ার্ন নিজেদের শেষ দুই ম্যাচ হারে তবে তারা ৭৬-এ থেকে যাবে। লেভারকুসেন শেষ তিন ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্টও হবে ৭৬। অর্থাৎ কাগজে-কলমে এখনো চ্যাম্পিয়ন নয় বায়ার্ন। তবে ‘কাগজ-কলম’র হিসাব বাদ দিলে বাস্তবতা ভিন্ন কিছুই বলছে।

বায়ার্নের গোল ব্যবধান ৬১ আর লেভারকুসেনর ৩১। এর অর্থ লেভারকুসেনকে বায়ার্নের সমান পয়েন্ট অর্জনের পাশাপাশি মেটাতে হবে ৩০ গোলের ব্যবধানও। যা অসম্ভব। ফলে কেইনের শিরোপা জয়ের চূড়ান্ত উদ্যাপনটা সময়ের অপেক্ষা শুধু। যে উদ্যাপনটা কাল লেভারকুসেন নিজেদের ম্যাচে পয়েন্ট হারালেই শুরু করতে পারবে বাভারিয়ান পরাশক্তিরা।

আজ লাইপজিগের মাঠে শুরুটা যতটা খারাপ হতে পারত ততটা খারাপভাবেই করেছিল বায়ার্ন। ৩৯ মিনিটের মাথায় লাইপজিগ ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল কেইনের ট্রফি জয় বোধ হয় আরও দীর্ঘায়িত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বায়ার্ন।

এক মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দারুণভাবে ম্যাচে সমতা ফেরায় তারা। দারুণ খেলতে থাকা বায়ার্নকে এগিয়ে দেন সানে। এরপর বায়ার্ন যখন জয়ের অপেক্ষায় তখনই পুলসেনের চমক। গোল করে বাড়িয়ে দেন কেইনের শিরোপা জয়ের অপেক্ষা। তাই প্রথম আলোর ছাপা পত্রিকায় দেওয়া হলো না বায়ার্নের ছবি। টিকে থাকল জাকের আলী আর তাঁর ছেলের ছবিটা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ইন র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

নবদম্পতির বনিবনা না হওয়ায় ঘটককে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর 

বিয়ের পর নবদম্পতির মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় ঘটকালির উপহার হিসেবে লুঙ্গি দেওয়ার কথা বলে এক বিয়ের ঘটককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।

মারধরের শিকার ওই ব্যক্তির নাম মজিবর শেখ (৬৫)। তিনি শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের ওমরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় মজিবরের ছোট ভাই নজরুল শেখ শেরপুর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, আহত অবস্থায় মজিবর শেখকে গত রোববার রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার শরীরে মারধরের একাধিক চিহ্ন রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুন সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের (২১) সঙ্গে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসুরিয়া গ্রামের মুন্নার (২৮) বিয়ে হয়। বিয়ের ঘটক ছিলেন মজিবর শেখ। সেদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে বর ও তার পরিবারের সদস্যরা কনে সুমাইয়াকে নিয়ে যান।

শজিমেক হাসপাতাল থেকে আজ বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি গেছেন। মোবাইল ফোনে মজিবর শেখ বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় সুঘাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে জহুরুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তারা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না। এরপর তারা একটি গাছের সঙ্গে আমাকে বেঁধে স্যান্ডেলের সঙ্গে গরুর গোবর লাগিয়ে এবং লাঠি দিয়ে হাতে, পায়ে ও মাথায় মারধর করেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে কমপক্ষে এক ঘণ্টা ধরে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে আমার ভাই নজরুল শেখ এসে আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।’

কনের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, ৯ জুন তার মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছেন। মেয়েকে তুলে দেওয়ার দুই দিন পর থেকেই মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়ে ও তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের মেনে নিতে পারছেন না। বিয়ের আগে ঘটক মজিবর শেখ জানিয়েছিলেন ছেলের পরিবার খুব ভালো। এ কারণে তার পরিবারের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসে একটু মারধর করেছেন।

মজিবর শেখের ছেলে সোনাউল্লাহ শেখ বলেন, তার বাবা কোনো পেশাদার ঘটক নন; টাকার বিনিময়ে ঘটকালিও করেন না। উপহারের কথা বলে ডেকে নিয়ে গিয়ে যেভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা অমানবিক।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় বুধবার পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মারধরের সত্যতা মিলেছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ