সুদানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) পোর্ট সুদান বিমানবন্দরের আশেপাশের একটি সামরিক বিমানঘাঁটি ও অন্যান্য স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে।
রোববার (৪ মে) সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলা হয়, পূর্বাঞ্চলীয় শহরটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী আরএসএফের প্রথম এই হামলায় ড্রোন ব্যবহার করে বিমানঘাঁটি, পাশ্ববর্তী একটি কার্গো গুদাম এবং কিছু বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করা হয়েছিল।
সুদানের সেনা-সমর্থিত সরকারের কেন্দ্রস্থল পোর্ট সুদানের বিমানবন্দরে আজ রোববার এই হামলা চালায় আরএসএফ।
সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিবা মরগান বলেন, “বেসামরিক এবং সামরিক উভয় বিমানবন্দর একই জায়গায় অবস্থিত। বন্দর নগরীর বাসিন্দাদের কাছ থেকে আমরা যা জানি তা হলো, আরএসএফ পাঁচটি ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছিল এবং বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “বিমানবন্দরের একটি অংশ বেসামরিক বিমানের জন্য, তবে একই বিমানবন্দরে সামরিক বিমান অবতরণ করে। তাই, ড্রোনগুলো সামরিক বা বেসামরিক স্থাপনা বা উভয়কেই লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।”
আল জাজিরার সাংবাদিক তার রিপোর্টে আরো বলেন, “হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।শনিবার বিকেলে বিমান বাহিনীর প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত যুদ্ধবিমানটিকে লক্ষ্য করে আরএসএফ হামলা চালিয়েছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।”
ফ্লাইট রাডারের নেভিগেশন তথ্য অনুসারে, পোর্ট সুদান বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পারার পর সুদানের একটি যাত্রীবাহী বিমানকে জেদ্দা বিমানবন্দরে পুনঃনির্দেশিত করা হয়।
তথ্য অনুসারে, বিমানটি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছিল কিন্তু রুট পরিবর্তন করে কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক কোটিরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, সুদানে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের গবেষণায়, মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বলে অনুমান করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে গত বছরের চেয়ে ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ভুটানকে পেছনে ফেলেছে। এবারও বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিস্থিতি ‘বেশ গুরুতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার ২০২৫ সালের এ সূচক প্রকাশ করা হয়।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) এ সূচকে গত ১৬ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ১৫ ধাপ এগোনোর পর ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৪৪ ধাপ অবনমন ঘটেছিল।
আরএসএফের তথ্য অনুসারে, সূচকে মোট ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম, স্কোর ৩৩ দশমিক ৭১। ২০২৪ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম। স্কোর ছিল ২৭ দশমিক ৬৪। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত (১৫১), ভুটান (১৫২) ও পাকিস্তানকে (১৫৮) ছাড়িয়ে গেলেও এখনও নেপাল (৯০তম), মালদ্বীপ (১০৪তম) ও শ্রীলঙ্কার (১৩৯) পেছনে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
২৩ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বার্ষিক সূচক প্রকাশ করে আসা প্রতিষ্ঠানটির মতে, এবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সূচকের ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বের অর্ধেক দেশের জন্য সাংবাদিকতার অনুকূল পরিবেশ ‘খারাপ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এক-চতুর্থাংশেরও কম দেশে পরিস্থিতি ‘সন্তোষজনক’।
সূচকে ২০২৪ সালে ১১ ধাপ পেছানোর পর এ বছর আরও দুই ধাপ পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৫৭তম স্থানে অবস্থান করছে। এই সূচকে দেশটির অবস্থান এখন পশ্চিম আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিয়েরা লিওনেরও নিচে। আরএসএফের মতে, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় ‘উদ্বেগজনক অবনতি’ ঘটিয়েছেন, যা দেশটিতে ‘স্বৈরাচারী মোড়ের’ ইঙ্গিত দেয়।
টানা নবমবারের মতো সূচকের শীর্ষে আছে নরওয়ে। এবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে এস্তোনিয়া ও নেদারল্যান্ডস। এ ছাড়া সূচকের তলানিতে স্থান পেয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া।