পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর থেকেই পিএসএলে খেলতে যাওয়া দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। এ নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল বিসিবি। পিসিবিও ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিল। রিশাদ, নাহিদ রানাও জানিয়েছিলেন; পাকিস্তানে তাঁদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

কিন্তু আজ ভারতের ড্রোন হামলার পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। শেষ পর্যন্ত পিএসএল শেষ না করেই দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদকে। বিসিবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর আজ পাকিস্তানে ড্রোন হামলাও চালিয়েছে ভারত। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়াম লাগোয়া ফুড স্ট্রিটের একটি ভবন। এই ঘটনার পর রাউয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের আজকের ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে। কাল এ মাঠেই মুখোমুখি হওয়ার কথা রিশাদের দল লাহোর কালান্দার্স ও নাহিদ রানার দল পেশোয়ার জালমির।

ড্রোন হামলার পর পিএসএলে খেলতে যাওয়া সব বিদেশী ক্রিকেটারের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র জানিয়েছে, পিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেছেন টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররা। কর্মকর্তারা তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও ক্রিকেটাররা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।

বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারও বিসিবিকে তাঁদের ফিরে আসার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিসিবিও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে। পিএসএল থেকে বাংলাদেশের এই দুই ক্রিকেটার যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে আসছেন, এটা নিশ্চিত। কবে, কখন, কিভাবে তাঁদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, বিসিবি এখন সেসব নিয়েই কাজ করছে।

ওদিকে পিসিবির মুখপাত্র আমির মীর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনকে বলেছেন, ‘আকাশসীমা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিদেশী ক্রিকেটারদের এখন দেশ (পাকিস্তান) ছাড়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে তারা এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আছে।’

এর আগে কাল বিসিবির কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে সভার পর বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, রিশাদ–নাহিদ রানার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। দুজনই তাঁকে জানিয়েছেন তাঁরা সেখানে ভালো আছেন। এরপর আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া দুটি পোস্টেও রিশাদ সেরকমই বুঝিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সব ঠিকঠাক চলছে! প্রতিটি আনন্দের মুহূর্ত উপভোগ করছি।’ এর আগে রাওয়ালপিন্ডির জিমে নাহিদকে নিয়েও একটি ছবি দিয়েছেন রিশাদ, যার ক্যাপশন, ‘ভ্রাতৃত্ব’।

এসব পোস্ট দেখে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তানে নিরাপদেই আছেন রিশাদ ও নাহিদ রানা। কিন্তু ভারতের ড্রোন হামলা পিএসএলের ভেন্যুতেই আঘাত করার পর সেখানে আর নিরাপদ বোধ করার কোনো কারণ নেই তাঁদের।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প এসএল

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার

যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।

জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে। 

এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ