ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আন্দোলন চলাকালে শাহবাগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সমস্বরে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে।

সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। হয়। কর্মসূচিতে ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে, সন্ধ্যা ৭টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা ‘একাত্তরের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘চব্বিশের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘একাত্তরের বাংলায়, রাজাকারের ঠাই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আমার সোনার বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘পাকিস্তানের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’সহ নানা স্লোগান দেন।

আরো পড়ুন:

বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐক্য সমাবেশ

৬ দফা আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

এদিন বিকেলে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাকিব বিশ্বাস ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন কর্মসূচীর আহ্বান জানিয়ে লেখেন, “আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা কারো দয়ায় পাওয়া না। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এ অর্জন। মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীতে আঘাত মানে আমাদের ইতিহাস ও অস্তিত্বে আঘাত। যেখানেই এসব অপচেষ্টা হবে, সেখানেই সম্মিলিত প্রতিবাদ হবে।”

তিনি আরো লেখেন, “আজ সন্ধ্যা ৭টায় রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার প্রতিবাদে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনাদের উপস্থিতি একান্ত কাম্য।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিবছর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ দেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর হাতে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তির’ চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠান হয়।

প্রধান উপদেষ্টার হাত থেকে বৃত্তির চেক নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন—জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের হাবীবা আক্তার, তেজগাঁও সরকারি কলেজের এস এম আবু তালেব ও ঢাকা কমার্স কলেজের খন্দকার মাহমুদুল হাসান।

এ বৃত্তির অধীনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজ ও ইনস্টিটিউটের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এককালীন সহায়তা দেওয়া হবে। এ বছর ৭২৫টি প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থী এ বৃত্তি পেয়েছেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মোট শিক্ষার্থী ৩১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি, যা দেশে উচ্চশিক্ষায় মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৭২ শতাংশ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ আছে ২ হাজার ২৫৭টি। জুলাই গণ-অভ‍্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন।

আজ বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, ‘এক বছর আগে তরুণেরা দেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন। ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের ফলে আমরা, সমগ্র জাতি, অধিকারবঞ্চিত প্রজা থেকে নতুন করে অধিকারভোগী নাগরিকে পরিণত হতে পেরেছি।’

সি আর আবরার আরও বলেন, ‘আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে স্বৈরাচার আর কখনো এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। তাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পালনের এ দিনে আমরা সেই জাতীয় প্রত্যাশাকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করি। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের শুধু একটি নতুন দেশ দিয়েছে তা নয়, নতুন স্বপ্নও দেখিয়েছে।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম আমানউল্লাহ, সহ–উপাচার্য লুৎফর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ এ টি এম জাফরুল আযম উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ