ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা
Published: 15th, May 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব ইশরাক হোসেনকে বুঝিয়ে না দেওয়ার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে আন্দোলনরত নাগরিকেরা।
ঘোষণা অনুযায়ী, আন্দোলনকারীরা আগামী শনিবার (১৭ মে) সকাল ১০টায় নগর ভবন থেকে প্রেসক্লাব হয়ে সচিবালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করবেন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে দ্বিতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা ১১টার পর তাঁরা নগর ভবনের ভেতরে অবস্থান নেন। হাজারো অন্দোলনকারীর অবস্থান কর্মসূচি থেকে নানা স্লোগান দেওয়া হয়। এসব স্লোগানের মধ্যে ছিল ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই’, ‘আমাদের মেয়র আমরাই বানাব’ প্রভৃতি।
আরও পড়ুননগর ভবনে অবস্থান, ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবি৩ ঘণ্টা আগেকর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারীরা বলেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটের পরও এখন পর্যন্ত ইশরাককে শপথ পড়ানো হয়নি। তাঁকে শপথ পড়াতে কেন এত দেরি হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, মশামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে জনবান্ধব মেয়র হিসেবে ইশরাকই উপযুক্ত ব্যক্তি। তাঁকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে তাঁরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
আজ আন্দোলনে সংহতি জানান ডিএসসিসির অনেক সাধারণ কর্মচারী। তাঁরা কাজ বন্ধ রেখে নগর ভবনের সব ফটকে তালা লাগিয়ে অবস্থান নেন।
আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা১৪ মে ২০২৫বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা আজকের কর্মসূচি শেষ করেন। এর আগে গত বুধবার একই দাবিতে নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আদালতের রায় ও ইসির গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাকের শপথ নিয়ে নানা টালবাহানা করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে তাঁকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গতকাল নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুনইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগরভবনের সামনে বিক্ষোভ১৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুঃখ প্রকাশ না করা পর্যন্ত শান্তি পাবে না, আওয়ামী লীগকে শফিকুল আলম
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্য ও সমর্থকরা যতক্ষণ না জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো শুরু করে, দুঃখ প্রকাশ না করে-ততক্ষণ পর্যন্ত তারা শান্তি পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১ জুলাই) শফিকুল আলম আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন।
তিনি লেখেন, “আমরা মাটি থেকে আপনাদের কুৎসিত প্রভাবের দাগ মুছে ফেলব এবং তা রক্ত দিয়ে ধুয়ে ফেলব। আপনারা কখনও শান্তি পাবেন না—যতক্ষণ না শহীদ ও আহতদের প্রতি সম্মান দেখান। যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন।”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা অপেক্ষা করেছি প্রায় দশ মাস—যাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্যবৃন্দ এবং তাদের সমর্থকরা দুঃখ প্রকাশ করে এবং একটি বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টায় আমাদের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে আপনারা যা করেছেন তা হল শহীদদের নিয়ে উপহাস, আমাদের সংগ্রামকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং ১৭ কোটি মানুষকে ‘জঙ্গি’ বলে কলঙ্কিত করেছেন—এই আশায় যে, আপনার ঔপনিবেশিক প্রভুরা এসে আবারো আপনাদের হাতে দেশ তুলে দেবে, যেন লুণ্ঠন ও বিশৃঙ্খলার আরেকটি অধ্যায় শুরু করতে পারেন।”
“দুঃখিত, এবার আর তা হবে না। জুলাই আমাদের সাহসী করেছে। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে প্রতিকূলতার মুখেও মাথা তুলে দাঁড়াতে। জুলাই আমাদের ডিএনএ-তে স্থায়ীভাবে এক বিরল সাহসের জিন প্রবেশ করিয়েছে। আমরা আর আগের মতো নই।”
শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই আমাদের শিখিয়েছে হাল না ছেড়ে ঝড়ের মতো গুলির মধ্যেও দাঁড়িয়ে থাকার দৃঢ়তা। জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না আমাদের শহীদদের, যাদের আপনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন; যাদের চোখ উপড়ে নিয়েছেন, যাদের আত্মাকে ছিন্নভিন্ন করেছেন।”
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, “আপনাদের সঙ্গে কখনও শান্তি হবে না—যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন, যতক্ষণ না আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনার হাতে রক্ত দেখতে পান।”
মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়ব—আমাদের জমিতে, নদীতে, পাহাড়ে। আমরা লড়ব ভার্চুয়াল জগতেও। আপনারা গণহত্যার সহযোগী ও মানবাধিকারের ডাকাত, আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলব।”
ঢাকা/ইভা