ম্যানসিটিকে হারিয়ে এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন ক্রিস্টাল প্যালেস
Published: 18th, May 2025 GMT
ম্যানসিটিকে হারিয়ে ১১৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন ক্রিস্টাল প্যালেস। মৌসুমের প্রথমার্ধে প্রিমিয়ার লিগ হাতছাড়া হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির। গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে। হতাশ মৌসুমে সিটিজেনদের চোখ ছিল এফএ কাপের শিরোপায়। সেটাও হাতছাড়া হয়েছে পেপ গার্দিওলার দলের।
ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে ১-০ গোলে হেরে শূন্য হাতে শেষ হয়েছে তাদের মৌসুম। অন্যদিকে এফএ কাপ দিয়ে ১১৯ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো বড় শিরোপা জিতেছে ক্রিস্টাল প্যালেস।
শনিবার রাতে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১৬ মিনিটে এবেরিসি এজে ম্যানসিটির জালে গোল দেন। এরপর শুরু হয় প্যালেসের রক্ষণ সামলে খেলা। ওই পরীক্ষায় তারা পাসও করেছে।
ম্যাচে ম্যানসিটি গোলে ২২টি শট নিয়েছে। গোলের লক্ষ্যে ছয়টি শট রেখেছে। একেরপর এক আক্রমণ তুলেছে। অথচ মাত্র ২১ শতাংশ বল পায়ে রেখে ও গোলে দুটি শট নিয়ে চ্যাম্পিয়স বনে গেছে প্যালেস।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
যুবরাজ সালমানকেই কেন বেছে নিচ্ছেন ট্রাম্প
একবার বিষয়টা ভেবে দেখুন তো—ফিলিস্তিনিদের সবচেয়ে আশার আলো হয়ে উঠছেন সেই লোক, যিনি গাজা খালি করে সেখানে সমুদ্রসৈকতের অবকাশকেন্দ্র করার স্বপ্ন দেখেছেন। এখন পর্যন্ত বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার সবচেয়ে পরিষ্কার এবং হয়তো একমাত্র পথটি দেখা যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকেই। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি কোণঠাসা হয়ে পড়া ইসরায়েলের প্রতি তিনি ক্রমশই বিরক্ত হয়ে পড়ছেন।
ট্রাম্পের বদলে যদি যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট হতেন, তাহলে গত সপ্তাহে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের ঘটনাপ্রবাহকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক, এমনকি যুগান্তকারী পরিবর্তন বলে মনে করা যেত। কিন্তু লোকটা যেহেতু ট্রাম্প, সে কারণেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, এটা স্থায়ী নাকি আকস্মিক কোনো সিদ্ধান্ত। কেননা তার বেলায় কয়েক সপ্তাহ অথবা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বদলে যেতে পারে।
আরও পড়ুনআফগান তালেবান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক কি নতুন মোড় নিচ্ছে২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ঘটনা যা দেখা গেছে, তার মধ্যে আমরা যদি আলোচনাকে সীমাবদ্ধ রাখি, তাহলে বলা যায়, গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সফর মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির একেবার স্পষ্ট এক পরিবর্তন। বিশেষ করে যে দেশটিকে দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রধান মিত্র হিসেবে দেখছে, সেই দেশের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির বড় পরিবর্তন। নিখাদ সত্যটা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলে যাননি।
এটা হয়তো ব্যাখ্যা করা এড়িয়ে যাওয়া যেত, কিন্তু সেটা যাচ্ছে না তার মূল কারণ, সফরে ট্রাম্প যা যা বলেছেন ও করেছেন। সৌদি আরবে গিয়ে তিনি কেবল যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানানি, তিনি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। যুবরাজকে তিনি বলেছেন, ‘আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।’ অথচ সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে একসময় কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেছিলেন। এবার ট্রাম্প গিয়ে যুবরাজকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তিনি এমন শক্তিমত্তায় দেশটাকে বদলে দিচ্ছেন, সেখানে ঘুমানোর সময় কীভাবে পান।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন। অথচ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, তেহরানের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষা কেবল বলপ্রয়োগের মাধ্যমেই থামানো সম্ভব। ট্রাম্প তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। যদিও এরদোয়ান ইসরায়েলের প্রতি বৈরী এবং হামাসের ঘনিষ্ঠ মিত্র।দুই নেতা একটি চুক্তি করেছেন। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনবে। গত সপ্তাহের আগপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের সম্পর্কের মূল ভিত্তি ছিল এই নিশ্চয়তা যে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে ইসরায়েল সব সময় সামরিক দিক থেকে শ্রেষ্ঠ থাকবে। কিন্তু সেই গ্যারান্টি এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ল। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, এখন সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার’। এ মর্যাদা এত দিন একমাত্র ইসরায়েলের ছিল।
উপরন্তু কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ট্রাম্প সৌদি আরবের প্রতি এই ভালোবাসা দেখালেন। এখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করার কোনো শর্ত ছিল না।
এ ধরন তার সফরের সবখানেই দেখা গেছে। সিরিয়া গিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন। সিরিয়ার নতুন নেতাকে ‘আকর্ষণীয়’ ও ‘লড়াকু’ বলে তিনি প্রশংসা করেছেন। অথচ ডিসেম্বর পর্যন্ত আহমেদ আল-শারা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তালিকায় শীর্ষ পলাতক দাগি সন্ত্রাসী। কেননা আল-কায়েদার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা ছিল। তাঁর মাথার দাম ছিল এক কোটি ডলার।
তাই পরিস্থিতির এমন মোড় নেওয়াটা বিস্ময়কর। এতে আবারও প্রমাণ হলো, ট্রাম্পের একজন দর–কষাকষিকারী হিসেবে বড় দুর্বলতা হলো বিনিময়ে কিছু না পেয়েই দিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। শারাকে এত কিছু তুলে দিলেও ইসরায়েল যে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছিল, তা নিয়েও মুখ খোলেননি ট্রাম্প। এখানে আবারও প্রমাণ হলো, দর–কষাকষিকারী হিসেবে ট্রাম্পের বড় দুর্বলতা রয়েছে। তার প্রবণতা হলো, বিনিময়ে কিছু না পেয়েই অন্যকে দিয়ে দেওয়া। শারাকে এত কিছু দেওয়ার পরও ইসরায়েল যে নিরাপত্তা গ্যারান্টি চাইছিল, সে ব্যাপারে কিছুই বলেননি ট্রাম্প।
ট্রাম্প এখন এমন একটা চুক্তি করতে চাইছেন, যেটা তিনি নিজে চান। তাঁর একসময়কার প্রধান মিত্র কী ভাবল কি ভাবল না, তাতে তার কিছু যায়–আসে না। ট্রাম্প এখন ইয়েমেনে হুতিদের সঙ্গে আলাদা একটা চুক্তি করতে চান, যাতে তারা লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজে হামলা করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু এই চুক্তিতে ইসরায়েলের ওপর হুতিরা যে বৃষ্টির মতো রকেট হামলা চলিয়ে যাচ্ছে, সেটি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন। অথচ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, তেহরানের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষা কেবল বলপ্রয়োগের মাধ্যমেই থামানো সম্ভব। ট্রাম্প তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। যদিও এরদোয়ান ইসরায়েলের প্রতি বৈরী এবং হামাসের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
যতটা জোরে ও স্পষ্টভাবে সম্ভব, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে তিনি আর তাঁর এক নম্বর পছন্দের লোক নন। যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর নিজের স্বার্থে কোনটা সবচেয়ে ভালো হবে, তা নির্ধারণে ট্রাম্প পিছপা হবেন না।
জোনাথন ফ্রিডল্যান্ড দ্য গার্ডিয়ানের কলাম লেখক
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত