যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বর্তমান রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিবের দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত এক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

নতুন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়ামের নিযুক্তির বিষয়টিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন:

দুই দিন পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ উদ্ধার

ইতা‌লিকে অপেক্ষমাণ ভিসা ইস‍্যু দ্রুত সমাধানের তা‌গিদ

এর আগে নতুন পররাষ্ট্রসচিবের দায়িত্বে কাকে দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে টানাপোড়েন চলছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে। সরকার সিদ্ধান্ত না বদলালে দুয়েক দিনের মধ্যে পরবর্তী পররাষ্ট্র সচিব নিযুক্তির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।

অবশ্য এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো.

নজরুল ইসলামের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তিনি বৃহস্পতিবার ছুটিতে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী মাসের মাঝামাঝির দিকে আসাদ আলম সিয়ামকে ঢাকায় ফেরানো হচ্ছে।

বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা আসাদ আলম যুক্তরাষ্ট্রের আগে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি রাষ্ট্রাচারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তখনকার পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেনের দপ্তরে পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন আসাদ আলম।

জুনে ঢাকায় ফিরেই সরাসরি পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারবেন না আসাদ আলম। কারণ, তিনি এখনো অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব। তাকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব বুঝে নিতে তার কিছুটা সময় লাগবে।

এদিকে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ (২১ মে) বিকালে সাংবাদিকদের জানান, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে জসীম উদ্দিন দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। সে ক্ষেত্রে নতুন পররাষ্ট্র সচিব দায়িত্ব নেওয়ার আগে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন রুহুল আলম সিদ্দিকী। তিনি আগামী ২০ জুন অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাবেন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অবশেষে স্থগিত আলোচিত সেই কবরস্থানের নির্বাচন!

দেশজুড়ে আলোচিত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাবনার চাটমোহর উপজেলার কবরস্থানের সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত করেছেন স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

বুধবার (২১ মে) বিকেলে কবরস্থান নির্বাচন কমিশন প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টার এ তথ্য জানিয়েছেন ।

তিনি জানান, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন,   ‘‘আগামী ২৪ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকায় আমরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছি। দুই একদিনের মধ্যে গ্রামের প্রধানবর্গ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বসে সমঝোতার মাধ্যমে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি উপহার দিবো। ’’ 

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান,   ‘‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সেখানে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে বলে জেনেছি। এই নির্বাচন ঘিরে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে তারা নিজেরা যদি সবার সম্মতিতে একটা গ্রহণযোগ্য কমিটি দিতে পারে তাহলে সেটাই ভালো হয়। তবে কেউ যদি এ নিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো। ’’ 

সভাপতি পদের প্রার্থী উপজেলা যুবদলের এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‌‌  ‘‘নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এখন সবাই যদি বসে আলোচনার মাধ্যমে সভাপতি বানায় করুক তারা। আমি আর এর মধ্যে নাই। যাকে সভাপতি বানায় বানাক আমার কোনো আপত্তি নাই। আমি আর কমিটির মধ্যে থাকবো না। অনেক কথা শুনতে হয়েছে। অনেক হুমকিও আসছে। সেগুলো আর বলতে চাইনা। ’’ 

অপর প্রার্থী মূলগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

এর আগে, চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু সভাপতি কে হবেন? এমন বিষয় নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুইটি পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এলাকাবাসীরা দাবি জানান, ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হোক। পরে থানার ওসির পরামর্শে সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তারপর গঠন করা হয় সাত সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ঘোষণা করা হয় তফসিল। দুইজন প্রার্থী জামানত দিয়ে মনোনয়ন ফরম তুলে জমা দেন। যাচাই বাছাই শেষে তাদের দুজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। দেওয়া হয় প্রতীক বরাদ্দ। আব্দুল কুদ্দুস ছাতা ও শরিফুল ইসলাম ছাতা প্রতীক পান। দুই প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে যায় এলাকা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থণা করেন প্রার্থীরা। তৈরি হয় নির্বাচনী আমেজ। এলাকাবাসীর মাঝেও দেখা দেয় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।

এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর চাটমোহর উপজেলাসহ দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচনের খবর। তবে এ নিয়ে এলাকায় বিএনপির দুই দ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাও বিরাজ করতে থাকে। মানুষের মাঝে সংশয় এবং উৎকণ্ঠা দেখা দিলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

ঢাকা/শাহীন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ