ট্যারিফ নির্ধারণ: সারাদেশে ব্রডব্যান্ডের এক রেট
Published: 22nd, May 2025 GMT
দেশে ইন্টারনেট সেবার ব্যয় যুক্তিসঙ্গত ও গ্রাহকবান্ধব করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সরকারি ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের জন্য নতুন ব্যান্ডউইথ মূল্য নির্ধারণ করে ট্যারিফ ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
এবার থেকে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এক রেটে মিলবে ইন্টারনেট সেবা। যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) জন্য একক ট্যারিফ নির্ধারণ করেছে।
নতুন ট্যারিফ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ কনটেনশন রেশিও ১:৮ ভিত্তিতে ৫ এমবিপিএস ইন্টারনেট সেবার মাসিক মূল্য হবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা, ১০ এমবিপিএস ৭০০ টাকা এবং ২০ এমবিপিএস ১ হাজার ১০০ টাকা। এই হার মহানগর, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন— সব স্তরে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া, রাখা হয়েছে সেবার মান ও জরিমানার নিয়মও। বিটিআরসি গ্রাহক সন্তুষ্টি ও সেবার মান রক্ষায় চালু করেছে ‘গ্রেড অব সার্ভিস’ ব্যবস্থা। এর আওতায় যদি কোনো গ্রাহকের ইন্টারনেট সেবা টানা ৫ দিন বিচ্ছিন্ন থাকে, তাহলে সে মাসে বিলের ৫০ শতাংশ ছাড় পাবে। ১০ দিন বিচ্ছিন্ন থাকলে ২৫ শতাংশ এবং ১৫ দিন বা তার বেশি সময় সংযোগ না থাকলে পুরো মাসের বিল মওকুফ করতে হবে সংশ্লিষ্ট আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি বলছে, এই ট্যারিফ প্রাথমিকভাবে ৫ বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। পরবর্তী সময়ে বিটিআরসি নতুন ট্যারিফ ঘোষণা না করা পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে। আইএসপিগুলোকে বিটিআরসির অনুমোদিত এই ট্যারিফ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
কোনো প্রতিষ্ঠান অনুমোদন ছাড়া অতিরিক্ত বা ভিন্ন ধরনের সেবা চালু করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই উদ্যোগের ফলে দেশের সব জায়গায় গ্রাহকরা সাশ্রয়ী, মানসম্মত এবং একক মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পাবেন। একই সঙ্গে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোও নির্দিষ্ট মান ও শর্ত মেনে সেবা দিতে বাধ্য হবে।
ঢাকা/হাসান//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ট আরস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।
ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।
নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।
আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।