হাঁটা এবং সাইকেলবান্ধব সড়ক তৈরিতে তরুণ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আয়োজনে শুক্রবার (২৩ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সংসদ ভবনের দক্ষিণ দিকে (আসাদগেট-খামার বাড়ি মোড়) পর্যন্ত প্রধান সড়কে এই তরুণ পদযাত্রা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রোড সেফটি পরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাস, উপ-পরিচালক মো.

নাজমুল হক, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যুব ও স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের উপ-পরিচালক মুনতাসির মাহমুদ, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের রোড সেফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলামসহ বিএরটিএ, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

আরো পড়ুন:

কোমর ব্যথা: নিয়মিত হাঁটার পরামর্শ ফিজিওথেরাপিস্টের 

জাপানিজদের স্বাস্থ্য ভালো থাকার দুই কারণ

এছাড়া বিভিন্ন ইয়ুথ গ্রুপ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ তরুণ ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, সড়কে যানজটের কারণে প্রতিদিন কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে হাঁটা ও সাইকেল চালানো একটি ভালো সমাধান হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন পথচারী ও সাইকেলবান্ধব নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো এবং তা নিশ্চতে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

বক্তারা আরো বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ ভালো রাখতে এবং সড়ক রোডক্র্যাশ হ্রাসে হাঁটা এবং সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

পদযাত্রায় আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেল্থ এন্ড ওয়েলবিংয়ের সদস্য এস জেড অপু ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তর যুব কমিটির আহ্বায়ক মো. রায়হান রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত তরুণ সদস্যরা বিআরটিএ পরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের হাতে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি উত্তাপন এবং এ সংক্রান্ত স্বারকলিপি হস্তান্তর করেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ র ড ক র স ন ট স স ইট র পদয ত র

এছাড়াও পড়ুন:

যে ১৪ দেশের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র করেছেন। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোসহ তুলনামূলক ছোট বাণিজ্য অংশীদার দেশের উদ্দেশে পাঠানো ১৪টি চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে এসব দেশের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপ করা হবে।

সোমবার (স্থানীয় সময়) ১৪ দেশকে পাঠানো চিঠিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।

নতুন এই শুল্কব্যবস্থা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে এবং পূর্বঘোষিত খাতভিত্তিক শুল্ক যেমন গাড়ি, ইস্পাত বা অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে একীভূত হবে না।

শুল্ক আরোপ করা ওই ১৪ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নামও রয়েছে। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা, তিউনিসিয়া, কাজাখাস্তানের নাম।

যে হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে

লাওসের ওপর ৪০ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ, থাইল্যান্ড ৩৬ শতাংশ, বাংলাদেশ ৩৫ শতাংশ, সার্বিয়া ৩৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ৩০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০ শতাংশ, তিউনিসিয়া ২৫ শতাংশ, কাজাখাস্তান ২৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫ শতাংশ, জাপান ২৫ শতাংশ ও মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় ওয়ালস্ট্রিটের শেয়ার বাজারে ধাক্কা লাগে। এক ধাক্কায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে উল্লেখযোগ্যভাবে ধস নামে। তবে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে তেমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।

এমন ঘোষণার পর কেউ পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে তার ওপরও সমপরিমাণ বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হবে বলে চিঠিতে ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি বাণিজ্য আলোচনার সুযোগের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, আপনারা যদি কোনো কারণে শুল্ক বাড়ান, তবে যে হারে বাড়াবেন তা আমাদের ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে যোগ হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে এই ঘোষণার পর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ কমে যায়। যদিও জাপানের নিক্কেই সূচক প্রাথমিক পতনের পর ঘুরে দাঁড়ায় এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার ১.৮ শতাংশ বেড়ে যায়।

এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া ট্রাম্পের এই বাণিজ্য যুদ্ধ বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে। এতে বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারকেরা নিজেদের অর্থনীতি রক্ষায় তৎপর হয়েছেন।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, আলোচনার সময়সীমা আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, সময়সীমা কঠোর হলেও শতভাগ কার্যকর নয়। যদি কেউ বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আসে, আমরা তা বিবেচনা করব।

এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্য আলোচক ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি ওয়েন্ডি কাটলার বলেন, সংবাদটি হতাশাজনক হলেও এখনও আলোচনার সুযোগ আছে। খেলা শেষ হয়ে যায়নি।

এদিকে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান রয়টার্সকে বলেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক খবর। আমরা আশা করেছিলাম শুল্কহার ১০-২০ শতাংশের মধ্যে থাকবে। ৩৫ শতাংশ শুল্ক আমাদের শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসবে।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাকশিল্প, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ এবং ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক নিয়োজিত।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেছেন, উচ্চ শুল্ক এড়াতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১ আগস্টের মধ্যে দ্রুত আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রস্তাব পেয়েছি। জাপানের প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে চিঠির বিষয়বস্তু বদলাতেও পারে।

দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা জোরদার করবে এবং কোনো চুক্তিতে গাড়ি ও ইস্পাতের শুল্ক অব্যাহতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

ইন্দোনেশিয়া বলেছে, তাদের পক্ষে এখনও আলোচনার সুযোগ আছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছে দেশটির প্রতিনিধি দল।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ শতাংশ শুল্ক অন্যায্য, কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ৭৭ শতাংশ পণ্যে কোনো শুল্ক নেই।

চীনের সঙ্গে ১২ আগস্টের মধ্যে একটি চুক্তি না হলে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসবে এবং যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরবরাহ চেইনে চীনকে বাদ দিয়ে চুক্তি করবে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও কয়েকটি বাণিজ্য ঘোষণা আসবে।

এছাড়াও ট্রাম্প ব্রিকসভুক্ত (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীনসহ) উন্নয়নশীল দেশগুলোকে হুমকি দিয়েছেন, অ্যান্টি-আমেরিকান নীতিতে চললে তাদের পণ্যে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ