ঘুম থেকে উঠেই স্কোয়াট করছেন, এতে শরীরে যা ঘটছে
Published: 24th, May 2025 GMT
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘নিয়মিত স্কোয়াট করে শরীরের ভারসাম্য এবং ভঙ্গি উন্নত করে নিতে পারেন।’’ কারণ স্কোয়াট এমন একটি ব্যায়াম যা শরীরের ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করতে পারে, আঘাত প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে এবং শরীরের কোরকে শক্তিশালী করতে পারে।
ক্লান্তি কেটে যায়: দিনের শুরুতে এই ব্যায়াম করলে মন মেজাজ ভালো থাকে। সকালের ক্লান্তি ও আলস্য কেটে যায়। শরীর ঝরঝরে লাগে, মন চনমনে হয়। এই ব্যায়াম করলে ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসৃত হয়। ফরে মানসিক স্বস্তি পাওয়া যায়।
টেন্ডন উন্নত হয়: আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ এর তথ্য, ‘‘স্কোয়াট করলে টেন্ডন (যা পেশীকে হাড়ের সাথে সংযুক্ত করে), লিগামেন্ট এবং হাড় শক্তিশালী হয়। যা আঘাতের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।’’
আরো পড়ুন:
রাজধানীর জনবহুল এলাকায় সিগারেট কারখানা, বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
সকালে কেন কোমর ব্যথা বাড়ে? করণীয় জেনে নিন
পেশীগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে: ২০১৮ সালের একটি গবেষণা- যেখানে প্ল্যাঙ্কের সময় কোর পেশীর সক্রিয়তার তুলনা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে যে স্কোয়াটের ফলে পিঠের শক্তিপ্রদানকারী পেশীগুলো আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
হার্টের ক্ষমতা বাড়ে: নিয়মিত স্কোয়াট করলে উচ্চ রক্তচাপ কমে এবং হার্টের ক্ষমতা বাড়ে। তবে যারা হৃদরোগে ভুগছেন তারা এই ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে: স্কোয়াট এমন একটি ব্যায়াম যা স্বল্প সময়ে করা যায়। কিন্তু এই ব্যায়ামের প্রভাব অনেক বেশি। এই ব্যায়াম করলে কর্টিসল, অর্থাৎ ‘স্ট্রেস হরমোন’ কমে হতাশা দূর হয়। ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসরণ বাড়ায় মন ভালো হয়ে যায়। শুধু তাই না এই ব্যায়াম ‘গ্রোথ হরমোন’ এবং টেস্টোস্টেরনের উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে পারে বলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
স্কোয়াট করার নিয়ম
প্রথমে দুই পা ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে। এ বার দুই হাত টান টান করে সামনে রেখে, দুই হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধেকটা বসতে চেষ্টা করুন। তারপর উঠে দাঁড়ান আবার বসুন। প্রথম প্রথম প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার এভাবে ওঠা-বসা করুন। এরপর ধীরে ধীরে আরও সংখ্যা বাড়াতে পারেন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যত ন প য় র যত ন স ক য় ট কর হরম ন
এছাড়াও পড়ুন:
১৫ বছর বেতন তার ১৫০০ টাকা!
‘‘১৫ বছর আগে চাকরি শুরু করেছি। মাসিক বেতন ছিল ১৫০০ টাকা। এখনও সেই ১৫০০ টাকাই আছে। এই টাকায় সংসার চলে না। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে। টাকার অভাবে অসুস্থ ছেলের চিকিৎসা করাতে পারি না। নাতিপুতিরা স্কুলে পড়ে, তাদের অনেক কষ্ট, খাতা-কলম কিনে দিতে পারি না।’’
কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন সুফিয়া খাতুন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের ঝাড়ুদার পদে কাজ করছেন।
সুফিয়া খাতুন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গ্রামের মৃত সুলতান আলী শেখের স্ত্রী। ৭ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনি।
সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘‘২৫ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। আমার এক ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেটা অসুস্থ। কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। যা ছিল সব বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে ওষুধ কিনতেও পারি না। ডাক্তার বলেছে ১০ লাখ টাকা লাগবে।’’
সরকারের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে সুফিয়া খাতুন আরো বলেন, ‘‘১৫ বছর বেতন বাড়ছে না। বেতনটাও যদি বাড়ত ছেলে-নাতিপুতিদের নিয়ে খেয়েপরে বাঁচতে পারতাম। শুনি অনেকে ভাতা পায়, আমি তাও পাই না।’’
‘‘কত স্যারের কাছে কাগজপত্র নিয়ে গেলাম বেতনটা বাড়ানোর জন্য, কিন্তু স্যাররা তাকিয়েও দেখলো না, কিছু বলেও না। কত লোককে বললাম, আমার ছেলের কার্ড করে দাও। কেউ তাকিয়েও দেখে না,’’ বলেন এই অসহায় বৃদ্ধা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃদ্ধা সুফিয়া খাতুন খুব কষ্ট করে জীবন কাটাচ্ছেন। অর্থের অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
প্রতিবেশী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুনের ছেলে সোহেল অনেক অসুস্থ। কাজ করতে পারে না। টাকার অভাবে তাদের অর্ধাহারে দিন কাটে। সরকার বা বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে তারা উপকৃত হবে। সাহায্য ছাড়া চিকিৎসা করানোর সমর্থা তাদের নেই।’’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের কেয়ার টেকার সৈয়দা আশেকুন নাহার বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুন ১৫ বছর ধরে ঝাড়ুদার পদে চাকরি করছেন। বেতন পান ১৫০০ টাকা। এটা কীভাবে হয়? এই টাকায় আজকাল দুদিন চলাও সম্ভব নয়!’’
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, ‘‘সুফিয়া খাতুনের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখব। আগামী মাস থেকে তার বেতন বৃদ্ধি করা হবে।’’
ঢাকা/কাঞ্চন//