বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশে চীনের সামরিক উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) বৈশ্বিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।

চীনের ব্যাপারে সতর্ক করে প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সম্ভবত বার্মা (মিয়ানমার), থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, বাংলাদেশ, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও তাজিকিস্তানে সামরিক উপস্থিতির কথা বিবেচনা করছে। এশিয়ায় প্রধান শক্তিধর দেশ হওয়ার কৌশলগত লক্ষ্য বজায় রেখেছে চীন। 

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তাইওয়ানের ওপর দখল নেওয়া, চীনের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া এবং চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রযুক্তিগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বেইজিং। বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য তারা ওয়াশিংটনকে চ্যালেঞ্জও জানাচ্ছে।

বৈশ্বিক বিভিন্ন হুমকি নিয়ে প্রতি বছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ)। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের প্রতিবেদন। ‘২০২৫ ওয়ার্ল্ডওয়াইড থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে চীন অংশে যেসব হুমকির কথা বলা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ,পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ একাধিক দেশের নাম রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কূটনৈতিক, তথ্যগত, সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের টেক্কা দিতে চীন তার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছে। তার সূত্র ধরেই ইন্দো-প্যাসিফিক ও তার আশপাশের অঞ্চলে ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে বেইজিং। এই প্রতিযোগিতায় চীনকে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন সামরিক জোট ও তার নিরাপত্তা অংশীদারত্বের জন্য সমর্থনকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। ওই প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশে চীনা সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কা করা হলেও উপস্থিতির স্বরূপ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। 

তবে বেইজিংয়ের সম্ভাব্য কার্যক্রমের ধারণা দিতে প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি মিশ্র ব্যবস্থায় চীন এসব কার্যক্রম চালায়। এতে গ্যারিসন বাহিনী (নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থানরত সেনা) ও ঘাঁটি রাখা হয়। এ ছাড়া যেসব দেশে এসব কার্যক্রম চালানো হয়, সেসব দেশের বাহিনীও যুক্ত হয়, সুবিধা পায়। এর বাইরে বাণিজ্যিক অবকাঠামোও থাকে এতে। গত বছর তানজানিয়ায় এমনই করেছে চীন।

তানজানিয়ার মাধ্যমে চীন বিশ্বব্যাপী নিজেদের সামরিক শক্তিমত্তা জানান দিয়েছে বলে দাবি করা হয় ওই প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, সেটি ছিল আফ্রিকায় চীনের সর্ববৃহৎ সামরিক মহড়া। এই মহড়ায় সমুদ্র ও আকাশপথে এক হাজারের বেশি সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয় চীনা বাহিনী।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র উপস থ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ