আসন্ন জাতীয় বাজেটে ক্ষেতমজুর ও গ্রামীণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য রেশনিং, পেনশন, কর্মসৃজন কর্মসূচি, বিধবা ভাতা, টিসিবির পণ্য বরাদ্দসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইনে করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এসব দাবিতে ৩০ ও ৩১ মে বিক্ষোভ ও মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে ক্ষেতমজুর সমিতি।

সোমবার ঢাকায় সংগঠনের নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা.

ফজলুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী সভাপতি আনোয়ার হোসেন রেজা, সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক কল্লোল বণিকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

সভা থেকে বাজেটে ক্ষেতমজুরদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবিতে ৩০ মে ঢাকায় ও ৩১ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সভায় নেতারা বলেন, প্রতিবছর বিশাল বাজেট ঘোষিত হলেও তার সুফল গরিব, মেহনতি মানুষের ঘরে পৌঁছায় না। বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ লুটপাট হয়ে যায়। তাঁরা দাবি করেন, বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে যাতে প্রকৃত উপকারভোগীরা সেই সুবিধা পান।

বক্তারা রাখাইনে করিডর এবং চট্টগ্রামের লাভজনক নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় নেতারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান সরকারও পূর্ববর্তী সরকারের মতোই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। ফলে গরিব মানুষ প্রয়োজনীয় খাদ্য কিনতে পারছে না।

তাঁরা বাজেটে রেশনিং চালু করে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব মজুরদের জন্য মাসিক ১০ হাজার টাকার পেনশন চালুর দাবি করেন। এ ছাড়া কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতা ও মজুরি বাড়ানো, খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বরাদ্দ এবং বিধবা ও বয়স্ক ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধির কথাও বলেন তাঁরা।

সভায় নেতারা বলেন, গ্রামে–গঞ্জে, হাটে-বাজারে ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃত্বে গরিব মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম আরও জোরদার করতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষ তমজ র র জন য বর দ দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ