পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় একটি ইউনিয়ন পরিষদে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাধীন ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল বিতরণের সময় উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে প্যানেল চেয়ারম্যানসহ ১১ ইউপি সদস্যকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটনা ঘটে। রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই ইউপি সদস্যদের বোদা থানা–পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে বিকেলে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যদের ঘিরে রাখেন।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউপি সদস্যরা আমাদের হেফাজতে আছেন। তাঁদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।’    

আটক ব্যক্তিরা হলেন ঝলই শালশিরি ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন ইসলাম, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খলিলুর রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হামিজ উদ্দিন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রিয় নাথ রায়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুনীল চন্দ্র রায়, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দাহির উদ্দিন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খাদিমুল ইসলাম, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, ১-২-৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শেফালী রাণী, ৪-৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিলকিস বেগম এবং ৭-৮-৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রুপালী বেগম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাধীন ভিডব্লিউবি কার্ডের ২৫৮ জন উপকারভোগীর কাছে চাল বিতরণ শুরু হয়েছিল। প্রতি মাসে ৩০ কেজি হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসের মোট ১৫০ কেজি করে চাল একেকজন উকারভোগী পাচ্ছিলেন। এর বিপরীতে ইউপি সদস্যরা প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উপকারভোগীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে তৈরি হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চাল বিতরণের প্রায় শেষ দিকে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে অবহিত করে। এরই মধ্যে উপকারভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান নেন।

খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর বোদা ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান। এমনকি উপকারভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া ১ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা পাওয়া যায়।

পরে পুলিশ ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাসদস্যদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর বেলা সাড়ে তিনটা থেকে অবরুদ্ধ ইউপি সদস্যদের রাত পৌনে ১১টার দিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ল ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩

দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ