Risingbd:
2025-09-17@23:12:23 GMT

৩১ বার এভারেস্টের চূড়ায়

Published: 27th, May 2025 GMT

৩১ বার এভারেস্টের চূড়ায়

‘এভারেস্ট ম্যান’ নামেও পরিচিত নেপালি শেরপা কামি রিতা নিজের রেকর্ড ভেঙে আবার নতুন রেকর্ড গড়লেন। তিনি এবার নিয়ে ৩১ বার মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ৩১তম অভিযানে তিনি আজ মঙ্গলবার বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের একটি দলকে নিয়ে নেপালের ৫৫ বছর বয়সী এই শেরপা আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ৪ টায় ৮,৮৯৪ মিটার উচ্চতার শৃঙ্গ জয় করেন।

অভিযানের আয়োজক সেভেন সামিট ট্রেকস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “কামি রিতা শেরপাকে কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তিনি কেবল একজন জাতীয় পর্বতারোহী নায়ক নন বরং এভারেস্টেরই একজন বিশ্বব্যাপী প্রতীক।”

কামি রিতা ১৯৯৪ সালে একটি বাণিজ্যিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে প্রথম এভারেস্ট জয় করেছিলেন এবং তারপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ এই পর্বত জয় করে চলেছেন। 

এমনকি একই বছরের মধ্যে দুইবার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডও রয়েছে তার। যেমন ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে দুবার করে এভারেস্টে আরোহণ করেছিলেন তিনি।

এভারেস্ট রেকর্ডের জন্য তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন তার সহকর্মী নেপালি শেরপা পাসাং দাওয়া, যিনি ২৯ বার এভারেস্ট জয় করেছেন। গত সপ্তাহে পাসাং দাওয়া তার ২৯তম এভারেস্ট অভিযান সম্পন্ন করেন।

কামি রিতা শেরপা গত বছর তার ৩০তম এভারেস্ট অভিযান শেষে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,  “রেকর্ডের জন্য আমি খুশি, আমি আরো খুশি যে আমার আরোহণ নেপালকে বিশ্বে স্বীকৃতি দিতে সাহায্য করেছে।”

ব্রিটিশ পর্বতারোহী কেন্টন কুল ১৯তমবারের মতো এভারেস্ট জয়ের এক সপ্তাহ পরে কামি রিতার এই কৃতিত্বের খবর এলো। কেন্টন কুল গত ১৮ মে ১৯তম বারের মতো এভারেস্ট জয় করেন। শেরপা নন এমন আরোহীদের মধ্যে এটি নতুন রেকর্ড। ৫১ বছর বয়সী ব্রিটিশ পর্বতারোহী কেন্টন কুল ১৮ মে সকাল ১১টায় নেপালি শেরপা দর্জি গ্যালজেনের সঙ্গে এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছান।

এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ এবং তাদের গাইড (শেরপা) সফলভাবে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেছেন।

নেপালের পর্যটন বিভাগ জানিয়েছে, এ মৌসুমে এভারেস্ট ও অন্যান্য পর্বতে ১,০০০ জনেরও বেশি আরোহণের অনুমতিপত্র জারি করেছে নেপাল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এভারেস্ট আরোহণের প্রচেষ্টার সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর ফলে অতিরিক্ত ভিড় ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গত বছর, নেপাল কর্তৃপক্ষ একটি নিয়ম চালু করেছিল যাতে পর্বতারোহীদের তাদের নিজস্ব মল পরিষ্কার করতে হবে এবং তা বেস ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনতে হবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে