জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর জনসাধারণের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা নিয়ে এই অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরু হয়। সেই সঙ্গে জনমনে এই ভাবনাও তৈরি হয় যে এবার আমরা পারব তো? অন্তর্বর্তী সরকার যে এই প্রত্যাশা যথাযথভাবে মেটাতে পারছে, সেটা খুব জোর গলায় বলা যাচ্ছে না। একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের পর ক্ষমতা গ্রহণ ও জনগণের সব প্রত্যাশা পূরণ খুব সহজ কাজ নয়।

আমাদের মধ্যে একটি দৃঢ় ধারণা ছিল যে এবার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলা যাবে। সেই পথে আমরা কতটা সফল হতে পারছি, তা সময়ই বলে দেবে।

তবে সাম্প্রতিক কিছু বিষয় জনসাধারণের মধ্যে সেই পথে হাঁটার দ্বিধা ও কিছু হতাশা তৈরি করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এমনই সময় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরত যাওয়ার চলমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে।

আরও পড়ুনঅধ্যাপক ইউনূস থাকছেন, সংকট কতটা কাটল ৫ ঘণ্টা আগে

আশার কথা হলো, প্রধান উপদেষ্টা থাকছেন। আমরা আশা করব, খুব শিগগির অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ে একটি মতৈক্যে পৌঁছা যাবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাওয়া বর্তমান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। কারণ, অন্তর্বতী ব্যবস্থাকে যতই দীর্ঘায়িত করা হবে, এমন সংকট বৃদ্ধির আশঙ্কাও বাড়বে।

যদিও সরকারের একজন উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন যে কেবল নির্বাচন করার জন্য তাঁরা দায়িত্ব নেননি। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কিছু বক্তব্য বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেলেও জাতীয় নির্বাচনের যথাযথ দিকনির্দেশনা সেখানে অনুপস্থিত ছিল। তাই একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ এখন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক নূরুল কবীরের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার খুবই প্রণিধানযোগ্য। সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা গত ৯ মাসে ক্রমেই হ্রাস পেয়ে চলেছে।’ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে একধরনের ধোঁয়াশা কাজ করছে। বিএনপি নানা সময় নির্বাচন নিয়ে কথা তুললেও অন্য দলগুলোর ভূমিকা তেমন একটা উচ্চকিত নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যাঁরা এ ধরনের ধোঁয়াশা তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়েও সরকারের পুনর্বিবেচনা করা উচিত। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গেও একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক সংলাপ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এ ধরনের জাতীয় স্বার্থবিষয়ক বিষয়াবলির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এতে করে সরকারের সঙ্গে অংশীজনদের দূরত্ব তৈরি হবে না।

আর জনগণ দেখতে পাচ্ছে না সংস্কার নিয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি। নব্বইয়ের পর আমাদের দেশের মানুষের কাছে নির্বাচন যে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছিল, সেই উৎসবের স্বাদ থেকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। বিগত আওয়ামী সরকারের সময় নির্বাচন ছিল একটি দুঃস্বপ্নের নাম।

অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে অতিদ্রুত নির্বাচন করার মতো সংস্কারের মাধ্যমে একটি রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা, যাতে জনমনে আস্থা গড়ে ওঠে। সংস্কারের অজুহাত দিয়ে যেন নির্বাচন পেছানোর প্রয়াস করা না হয়।

আরও পড়ুনঅন্তর্বর্তী সরকার কতটা সবার হতে পারছে২৬ মে ২০২৫

এ প্রসঙ্গে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম মনে করেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে একটি অপ্রয়োজনীয় বিভাজন তৈরি করা হয়েছিল এবং ২০২৫–এর ডিসেম্বরের মধ্যেই দুটোই করা সম্ভব।’ এই বিভাজন দূর করার জন্য এই সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের জনগণও অধীর আগ্রহে সেদিকেই তাকিয়ে আছে।

আরও দুটি বিষয় অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জনসাধারণের দূরত্ব তৈরির পেছনেও ভূমিকা রাখছে। এগুলো হলো মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া। অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় এমন জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে। বিএনপি পরিষ্কারভাবে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ও বাস্তবায়ন করার মতো ‘ম্যান্ডেট’ এই সরকারের রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

অপর দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের এক বক্তব্যে জানা গেছে যে তাঁরা মনে করেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান তাঁদের সেই ‘ম্যান্ডেট’ দিয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে যে তারা মানবিক করিডর নিয়ে কারও সঙ্গে এখনো আলোচনা করেনি।

মানবিক করিডর বা প্যাসেজ যে নামেই ডাকি না কেন, তা একটা জটিল বিষয়। এর সুদূরপ্রসারী ভূমিকা কী হবে, সেটিও ভেবে দেখা দরকার। বিষয়টি এই অঞ্চলের জটিল ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে জটিলতর করে তুলতে পারে বিধায় তা নিয়ে বিস্তর আলোচনার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং তা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করাই উত্তম। এই বিষয়গুলো এতটা জরুরি না যে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তেমনটা হলে রাজনৈতিক দলসহ অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই করা আবশ্যক।

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে পরিষ্কার দিকনির্দেশনার অভাব ও জাতীয় স্বার্থসংবলিত বিষয়ে নানাবিধ বিতর্কিত মন্তব্য প্রদান এই অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকাকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে করে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি না হয়।

আরও পড়ুনরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে১৮ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যাঁরা এ ধরনের ধোঁয়াশা তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়েও সরকারের পুনর্বিবেচনা করা উচিত। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গেও একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক সংলাপ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এ ধরনের জাতীয় স্বার্থবিষয়ক বিষয়াবলির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এতে করে সরকারের সঙ্গে অংশীজনদের দূরত্ব তৈরি হবে না।

আমরা বারবার দেশ গঠনের সুবর্ণ সুযোগ হারিয়েছি। স্বাধীনতার পরের সুযোগকে ‘বেহাত বিপ্লব’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। নব্বইয়ের গণ–অভ্যুত্থানের পরও তেমন উল্লেখযোগ্য ও মৌলিক বদল আনা যায়নি।

আবার আমরা সেই পথে হাঁটতে চাই না। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ ও জাতীয় স্বার্থবিষয়ক সিদ্ধান্ত একটি ঐকমত্যের মাধ্যমে নেওয়ার চর্চা জারি রাখা জরুরি। রাজনৈতিক ও সামগ্রিক জাতীয় ঐকমত্য গঠনে একটি কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। তবে পাশাপাশি যদি একে অপরের ওপর আস্থা তৈরি করা না যায়, তাহলে সেই ঐকমত্য কীভাবে গড়ে উঠবে? তাই এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে করে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

বুলবুল সিদ্দিকী সহযোগী অধ্যাপক, রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক র জন ত ক সরক র র এ ধরন র ব যবস থ ঐকমত য অ শ জন র জন য দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”

দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”

নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”

রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন
  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • ঐকমত্য কমিশনের কাজ সফলভাবে শেষ হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • ঐকমত্য কমিশন হাজির করেছে অনৈক্যের দলিল: বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন
  • ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
  • জুলাই সনদ নিয়ে জট খুলুন, সময় কিন্তু চলে যাচ্ছে
  • সমস্যা সমাধান করে নির্বাচনের পথে এগোন: অন্তর্বর্তী সরকারকে মির্জা ফখরুল
  • অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই প্রকাশিত