অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার উদ্যোগের বিরুদ্ধে থাকা আমলাদের অপসারণ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে গণসমাবেশ করেছে ‘জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতা’।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর সচিবালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে আবদুল গণি সড়কে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে এই গণসমাবেশ শুরু হয়।

গণসমাবেশ ‘আমলাদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সচিবদের জমিদারি, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা, সচিবালয়ে হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘শেখ হাসিনার দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।

গণসমাবেশ সংস্কারবিরোধী সচিব ও আমলাদের অপসারণ এবং ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ করার দাবি জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের নেতৃত্বে এই গণসমাবেশে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

গণসমাবেশে আরিফ সোহেল বলেন, ‘সচিবালয়ে যেসব সচিব ও আমলা সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে এবং সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে, আমরা তাদের অপসারণের দাবি জানাচ্ছি। চাকরিবিধি নিয়ে আন্দোলন করা সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আরিফ সোহেল আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর আমলাদের অপসারণ করতে হবে। তাঁরা তাদের বিচার ও অপসারণের দাবি জানাচ্ছেন।

আরও পড়ুনকড়া নিরাপত্তার মধ্যে সচিবালয়ে চতুর্থ দিনের মতো কর্মচারীদের বিক্ষোভ৪ ঘণ্টা আগেগণসমাবেশে প্ল্যাকার্ড হাতে ‘জুলাই বিপ্লবী ছাত্র-জনতার’ নেতা-কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ের সামনে আবদুল গণি সড়কে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণসম ব শ র স মন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার জুরাইন রেলগেট–সংলগ্ন বিক্রমপুর প্লাজা চত্বরে এক গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির এ কথা বলেন।

পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কদমতলী-শ্যামপুর থানা।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘নতুনভাবে আবার এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আপনি কী মেসেজ দিতে চান? আবার সেই স্বৈরাচার আসবে? আবার সেই চাঁদাবাজ আসবে? আবার সেই মায়ের কোলগুলো খালি হবে? দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে? আয়নাঘর তৈরি হবে? পিলখানা হত্যা হবে?’ তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মানুষ আমরা আর দেখতে চাই না। পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে।’

বিভিন্ন মৌলিক সংস্কারে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার (দ্বিমত পোষণ করার) বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, সরকার গঠনের পরে দুই বছরের ভেতরে সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে। অন্ধকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ নেই। হাইকোর্ট এখন সবাই চেনে।

একটি রাজনৈতিক দল জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা এখনো বুঝতে পারেনি উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলটির কলঙ্ক রচিত হয়েছে। সামনে নির্বাচনেও বাংলাদেশের মানুষ একই কলঙ্ক রচনা করবে। বাংলাদেশের ভেতরে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।

সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করে দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারছে না।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সবাই বলেছে, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একটি বড় দল বলেছে সংবিধানের সংশোধন, আইনি ভিত্তি দেওয়ার এই কাজগুলো এখন হবে না। নির্বাচনের পরে যে সংসদ আসবে, তারাই এসে নাকি সেই কাজগুলো করবে। তাহলে কেন জুলাই সনদের জন্য দুই মাস সময় নষ্ট করা হলো? এর পেছনে নিশ্চয়ই অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ দুটিতেই পিআর মানতে হবে, তা না হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। সঞ্চালনা করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে