সোনারগাঁয়ে খেলার বল আনতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে হাবিবুর ও জুনায়েদ নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৮মে) দুপুরে উপজেলার কাচঁপুরের বেহাকৈর এলাকায় এঘটনায় ঘটে। তারা ওই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে জুনায়েদ ও হানিফার ছেলে হাবিবুর।

স্থানীয়রা জানান, বাড়ি’র পাশে একটি খালি জায়গায় শিশু দুটি ফুটবল খেলা করছিলো। এসময় জায়গার পাশে থাকা পুকুরের পানিতে বলটি পড়ে যায়।

প্রথমে জুনায়েদ পানিতে নেমে বলটি আনতে গেলে সাঁতার না জানায় পানিতে তলিয়ে যায় তাকে বাঁচাতে গেলে হাবিবুর সাঁতার না জানায় দুইজনই পানিতে ডুবে যায়।

পরে দুইজনের মরদেহ পুকুরে ভেসে উঠলে বাড়ির পাশের এক নারী দেখে তার চিৎকারে স্থানীয় এসে দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান জানান, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

মারামারির পর দুদিন ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ

চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি ও সংঘর্ষের জের ধরে গত বুধবার সকাল থেকে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি।

গতকাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অন্য দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা এসে ভিড় করলেও গতকাল সেখানে নতুন রোগী খুব বেশি দেখা যায়নি। কোনো চিকিৎসক ও নার্স ছিলেন না। বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে চিকিৎসাধীন অনেক রোগী অন্যত্র চলে গেছেন।

তবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের কেউ হাসপাতাল ছেড়ে যাননি। এই মুহূর্তে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত এবং অন্য রোগীদের কতজন হাসপাতালে অবস্থান করছেন, তা জানা যায়নি।

হাসপাতালে কর্তব্যরত আনসার সদস্য আল মামুন জানান, সবাই চলে যায়নি। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ছাড়াও কিছু রোগী আছেন। তাঁদের সঠিক সংখ্যা তিনি বলতে পারেননি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব৵ক্তিদের একজন আবির আহমেদ। গতকাল রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে তাঁরা কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এমনকি খাওয়াদাওয়াও বন্ধ। জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার ব্যাপারে কী হবে, এ ব্যাপারে তাঁরা কোনো আশ্বাস পাননি। আগামীকাল (শুক্রবার) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন বলে জানান আবির আহমেদ।

এদিকে প্রতিদিনের মতো অনেক রোগী এসে ফিরে যাচ্ছেন। গতকাল কিশোরগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন মরিয়ম আক্তার ও তাঁর সন্তান মো. আবদুল্লাহ। কথা প্রসঙ্গে মরিয়ম আক্তার জানালেন, ঝামেলা হয়েছে, সেটা তাঁরা জানতেন না। ছেলের চোখে সমস্যা, তিন মাস পরপর ডাক্তার দেখাতে তাঁদের হাসপাতালে আসতে হয়।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের কয়েকজন গত মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানালে পরিচালক কক্ষ ছেড়ে চলে যান। এর জের ধরে বুধবার সকালে নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান। ওই সময় প্রথমে হাসপাতালে আসা সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে এবং পরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কর্মচারীদের হাতাহাতি হয়। পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) থেকেও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা এসে যোগ দিলে মারামারি আরও বড় আকার ধারণ করে।

গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে র‍্যাবের ছয় সদস্যের একটি দলকে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে আসতে দেখা যায়। দলের এক সদস্য সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাত আটটা পর্যন্ত তাঁদের এই হাসপাতালে থাকার নির্দেশনা রয়েছে।

র‍্যাব ছাড়াও বুধবার থেকে হাসপাতালে অবস্থান করছে পুলিশের একটি দল। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবারের মারামারি ও সংঘর্ষের পর আর কোনো অঘটন ঘটেনি। শুধু চিকিৎসাসেবা বন্ধ আছে।

বুধবারের সংঘর্ষের পর বেশির ভাগ রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে কিছু রোগী এখনো রয়ে গেছেন। তাঁদের একজনের নাম শাহাবুদ্দিন (৪০); তাঁর বাড়ি ফেনী। ২০ মে তিনি চোখের চিকিৎসা করাতে এই হাসপাতালে আসেন।

শাহাবুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসেছি চিকিৎসা নিতে। কিন্তু চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখে কোথায় যাব? গতকাল (বুধবার) পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছিল, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সেই আশায় বসে আছি। তবে সারা দিন বৃষ্টি থাকায় ঠিকমতো খাবার আনতে পারছি না।’

আস্থার সংকট

একাধিক চিকিৎসক ও নার্সের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবারের সংঘর্ষের পর চিকিৎসক ও কর্মচারীরা আস্থার সংকটে আছেন। এই অবস্থায় চিকিৎসকেরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা দিতে চাইছেন না।

জানতে চাইলে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কর্মবিরতি চলছে না। তবে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা আস্থাহীনতায় ভুগছেন। তাই তাঁরা আসছেন না।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, তাঁদের অন্তত ৯০ শতাংশ সুস্থ আছেন, যাঁদের বাড়ি পাঠানো যেতে পারে। যাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন হবে, তাঁদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, চিকিৎসকেরা এই মুহূর্তে রোগীদের কোনো ওষুধ দিলে রোগীরা মনে করবেন, তাঁরা শত্রুতাবশত কিছু খাইয়ে দিচ্ছেন।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত রোগীরা উন্নত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। এ প্রসঙ্গে খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘তাঁরা আমাদের চিকিৎসায় সন্তুষ্ট নন। সবাই বিদেশে যেতে চান। এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে প্রায় ১৫ জনকে পাঠানো হয়েছে। আমি মনে করি, বাকিদের অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত। না হলে এই সংকটের সমাধান হবে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ