জামিন পেয়ে বেপরোয়া সন্ত্রাসীরা, জড়াচ্ছে চাঁদাবাজি, খুনোখুনিতে
Published: 29th, May 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় হয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরস্পরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়াচ্ছেন তাঁরা।
তবে মিরপুর, পল্লবী ও কাফরুল এলাকায় বিপরীত চিত্রও রয়েছে। এসব এলাকায় সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তুলনামূলক কম। এই এলাকাগুলোতে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সন্ত্রাসীদের মধ্যে একধরনের সমঝোতা রয়েছে।
দুই দশক পর জামিনে বের হওয়ার পর খুনোখুনিতে নাম আসে মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালের। গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রায়েরবাজারে সাদেক খান আড়তের সামনে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এলাকার ‘দখল’ নিতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের বিরোধ থেকে জোড়া খুনের ওই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই ঘটনায় গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়। এতে কিছুটা চাপে পড়েন এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের এলাকার অপরাধজগতে পিচ্চি হেলালের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যাপ্টেন ইমন। ওই মামলার পর ইমনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকেই একের পর এক গ্রেপ্তার হন।মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের এলাকার অপরাধজগতে পিচ্চি হেলালের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যাপ্টেন ইমন। ওই মামলার পর ইমনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকেই একের পর এক গ্রেপ্তার হন।গত ১০ জানুয়ারি রাতে এলিফ্যান্ট রোডের বিপণিবিতান মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে ব্যবসায়ী এহতেশামুল হককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনার নেপথ্যে হাজারীবাগের শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ক্যাপ্টেন ইমনের নাম আসে। পরে এ ঘটনায় পিচ্চি হেলালের ভাই ও এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওয়াহিদুল হাসান নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন।
মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের এলাকার অপরাধজগতে পিচ্চি হেলালের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যাপ্টেন ইমন। ওই মামলার পর ইমনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকেই একের পর এক গ্রেপ্তার হন। জিগাতলা থেকে গ্রেপ্তার হন ইমনের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে পরিচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজ বিন আলম। এরপর এই এলাকায় ইমনের নিয়ন্ত্রণ কিছুটা কমে যায়। এই সুযোগে পিচ্চি হেলালের তৎপরতা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুনতৎপর শীর্ষ সন্ত্রাসীরা, আধিপত্য বিস্তারে খুনোখুনি২৮ মে ২০২৫একইভাবে মিরপুর, পল্লবী ও কাফরুল এলাকায় অন্তত চার শীর্ষ সন্ত্রাসীর তৎপরতার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এই সন্ত্রাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। বিদেশ থেকে মুঠোফোনে কল দিয়ে প্রায়ই আতঙ্ক তৈরি করছেন তাঁরা। তাঁদের হয়ে কাজ করেন চিহ্নিত অপরাধীরা। কোথাও কোথাও অপরাধমূলক কাজে কিশোর গ্যাং সদস্যদের ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।
এই অপরাধবিশেষজ্ঞ মনে করেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণেও পরিবর্তন এসেছে। এ জন্য শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি। এখনই যদি শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতা শক্তভাবে দমন করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ফ য ন ট র ড ক য প ট ন ইমন গ র প ত র হন ম হ ম মদপ র র তৎপরত দ বন দ ব র এল ক র র জন ত ক ধ নমন ড এল ক য় পর চ ত অপর ধ ঘটন য় ইমন র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।