চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা ‘আগ্রাসীভাবে’ বাতিল করবে ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 29th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা ‘আগ্রাসীভাবে’ বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই পদক্ষেপে ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আছে বা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের’ অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “চীন এবং হংকং থেকে ভবিষ্যতের ভিসা আবেদনকারীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বৃদ্ধির জন্য মানদণ্ডও সংশোধন করা হবে।”
আরো পড়ুন:
বিভিন্ন দেশের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপে স্থগিতাদেশ মার্কিন আদালতের
ট্রাম্প প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করলেন ইলন মাস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন পাল্টা শুল্ক চাপালে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পাশাপাশি বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
এর আগে গতকাল বুধবার ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের সব দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোকে স্টুডেন্ট ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। এর কারণ হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই-বাছাই কার্যক্রম আরো জোরদারের পরিকল্পনার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস দেশ চীন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে মোট বিদেশি শিক্ষার্থীর প্রায় এক-চতুর্থাংশই ছিল চীনা শিক্ষার্থী। বিবিসির অনুমান অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার চীনা শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত ছিল।
চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের মার্কিন পদক্ষেপের বিষয়ে বেইজিং এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
তবে বুধবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বব্যাপী স্টুডেন্ট ভিসা অ্যাপয়েন্ট বন্ধের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানায় চীন। চীনের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা মার্কিন পক্ষকে চীনের শিক্ষার্থীদের সহ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি।”
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে বিদেশি অনেক শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করেছে এবং হাজার হাজার ভিসা বাতিল করেছে। তবে এ ধরনের অনেকগুলো পদক্ষেপ আদালতের রায়ে স্থগিত হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত মিলিয়ন ডলারের তহবিলও আটকে দিয়েছে। বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের মূল টার্গেটে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অত্যধিক উদার এবং ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এসব পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকারের ওপর আঘাত হানছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ব শ বব দ য পদক ষ প
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি