বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজার উপকূলে সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বিশাল ঢেউ সৈকতের ঝাউবাগান ও জিওব্যাগে আছড়ে পড়ছে। এতে সাগরপাড়ের নানা ধরনের পর্যটন ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দেখা গেছে, বিশাল ঢেউ উপকূলে বারবার আঘাত করছে। কিছু ঢেউ জিওব্যাগ পেরিয়ে ঝাউবাগানে আছড়ে পড়ছে। জিওব্যাগের উপর বসে থাকা পর্যটকেরাও ঢেউয়ের কবলে পড়ছে।

ঢেউয়ের তাণ্ডবে উপকূলে জেড স্কী ও পর্যটকদের বসার কিটকট (ছাতা) সরিয়ে রাখা হয়েছে। বিচ বাইক, ফটোগ্রাফার এবং অন্য ব্যবসায়ীরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। 

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে উড়োজাহাজ লক্ষ্য করে ফুটবল নিক্ষেপ, ভিডিও ভাইরাল

মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক রশিদ আহমেদ বলেন, “সাগর এত উত্তাল আগে দেখিনি। গোসলের চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সাহস হয়নি। ভয় লাগছে ঢেউ তুলে নিয়ে যাবে।”

লাইফ গার্ড কর্মী মো.

শুক্কুর বলেন, “জোয়ারের সময় ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। তাই নিরাপত্তার জন্য কাউকে সাগরে নামতে দেয়া হচ্ছে না।”

ব্যবসায়ী রানা বলেন, “সৈকতের লাবণী থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েক শত কিটকট তুলে রেখেছি। এখন ব্যবসা নেই, শুধু অপেক্ষা করছি আবহাওয়া ভালো হওয়ার।”

দুপুর ১১টার পর হঠাৎ ঝোড়ো বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। অনেক পর্যটক দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকেন। বাতাসে উড়ে যায় ময়লা ও ছাতা। চারপাশে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল ৯টা পর্যন্ত) জেলায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ও আগামীকাল শুক্রবার (৩০ মে) ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। 

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

একটি দল ছাড়া কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না, তা সঠিক নয়: গণফোরাম

গণফোরাম বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে একটি দল ছাড়া আর কোনো দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা সঠিক নয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে বলেও উল্লেখ করেছে দলটি।

আজ শুক্রবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণফোরামের সভাপতি পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। গণফোরামের সভাপতি পরিষদের অন্যতম সদস্য এস এম আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, সভাপতি পরিষদের সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজবাহউদ্দীন, মোশতাক আহমেদ, সুরাইয়া বেগম, সেলিম আকবর, শাহ নুরুজ্জামান প্রমুখ।

সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে গণফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রতীয়মান হচ্ছে এবং এর ফলে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

গণফোরামের নেতারা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের সুফল পাওয়ার জন্য দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা জরুরি। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের রূপরেখা ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এ দায় রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে দুঃখজনক।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের বৈঠক জাতিকে আরও হতাশ করেছে বলে উল্লেখ করেছে গণফোরাম। দলটি বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এবারের বৈঠকে গণফোরামকে আমন্ত্রণ না জানানোর ফলে সরকার ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

গণফোরামের নেতারা আরও বলেন, গত ৯ মাসে সরকার আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার ও জনপ্রশাসনের অস্থিরতা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার বা দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা এখনো লক্ষ করা যায়নি। ফলে সরকারের প্রতি জনসমর্থন যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ও জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে।

গণফোরাম সভাপতি পরিষদের সভায় অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সে ঐক্য যেন কোনো অশুভ শক্তি বিনষ্ট করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ