‘কিশোর গ্যাং কালচারের মাস্টারমাইন্ড জাহাঙ্গীর কবির নানক’
Published: 30th, May 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে শুরু হয় কিশোর গ্যাং কালচার। আর এই কিশোর গ্যাং কালচারের মাস্টারমাইন্ড হলেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। এই চক্রের সদস্যরা এখনো বেপরোয়া। এরা মূলত দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠে। মোহাম্মদপুর এলাকায় সন্ত্রাসের জনপদ হয়ে উঠার মূলে কিশোর গ্যাং।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি অডিটরিয়মে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুব দলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ দাবি করেন, মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের সৃষ্টি করা সন্ত্রাসী ও জঞ্জাল দূর করতে চেষ্টা করতে এখন চেষ্টা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা দলের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনমাফিক সহায়তা করে আসছি। এখনও দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা চলছে।
সম্প্রতি মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ঘটনায় এজাহারে উল্লেখিত তিন সন্ত্রাসীর দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এজাহারে উল্লেখিত জাভেদ, শাওন রুবেল নামে এসব সন্ত্রাসীরা সাবেক এক মন্ত্রীর ‘বডিগার্ড’ ছিলেন।
যুবদল নেতা জাহিদ আরও বলেন, সম্প্রতি দু’টি গণমাধ্যম রহস্যজনক কারণে এবং আমাদের কোনো বক্তব্য না নিয়ে আমার নাম ব্যবহার করে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। এতে করে শুধু রাজনৈতিক কিংবা সামাজিকভাবেই নয়, পরিবারের কাছেও হেয় হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলের ১৭ বছরে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। কিন্তু আ.
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি উত্তর লিটন মাহমুদ বাবু, আদাবর থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এস এম বাবু, মোহাম্মদপুর থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী খানসহ মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।