নেচার ইনডেক্স: গবেষণায় দেশসেরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 31st, May 2025 GMT
গবেষণার গুণমান ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক উজ্জ্বলতম অবস্থানে পৌঁছিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল নেচার ইনডেক্সের ২০২৫ সালের তালিকায় গবেষণার মান ও সংখ্যার ভিত্তিতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে রাবি।
অন্যদিকে সার্বিকভাবে শীর্ষস্থান দখল করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
সম্প্রতি নেচার ইনডেক্স প্রকাশিত র্যাংকিং থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে ২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কালের গবেষণাকর্মের উপর ভিত্তি করে।
আরো পড়ুন:
২ দশক পর স্থায়ী হলো রাবির ২৬৪ কর্মচারীর চাকরি
১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
নেচার ইনডেক্স অনুযায়ী, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বব্যাপী রাবির অবস্থান ২ হাজার ৭৩৪ এবং একাডেমিকভাবে ১ হাজার ৮৪৫।
এছাড়া রসায়ন বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে ১ হাজার ৮২১ নম্বরে রয়েছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় এবং বিশ্বে অবস্থান ১ হাজার ৬০৩তম।
২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ‘এনভায়রনমেন্টাল হেলথ পার্সপেক্টিভস’ নামক জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, যার শেয়ার ০.
এদিকে, বিশ্বজুড়ে গবেষণা কার্যক্রমের মানদণ্ডে বাংলাদেশের অবস্থানও এবারে বেশ আশাব্যঞ্জক। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার ঠিক পরেই রয়েছে। বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৫৯তম। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, “বিশ্বখ্যাত নেচার ইনডেক্স ২০২৫-এ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে রাবি। আমরা গর্বিত, এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্জন। আমরা আরো বেশি গবেষণায় মনোযোগী হয়ে গুণমানসম্পন্ন গবেষণা প্রবন্ধ রচনা করে রাবির এই অবস্থান আরো দৃঢ় করবো ইনশাআল্লাহ।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব জানান, “এখন পর্যন্ত এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সেরা অর্জন। এই সপ্তাহেই ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত গবেষণা প্রজেক্ট অনুমোদন করা হয়েছে। প্রথমবারের মত ছাত্র-গবেষকদের জন্য কিছু প্রণোদনা রাখা হয়েছে। আশা করছি, রাবি ধারাবাহিকভাবে গবেষণায় তার অবস্থান ধরে রাখবে।”
গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা গবেষণায় খুবই কম বরাদ্দ পাই। আমরা যারা প্রশাসনে আছি, তারা গবেষণা খাতকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। বরাদ্দ কম হলেও আমাদের গবেষকেরা ভালো করছেন, যা র্যাংকিং প্রমাণ করে। প্রণোদনা বাড়ালে আরো ভালো ফল সম্ভব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন চ র ইনড ক স র অবস থ ন প রক শ ত প রবন ধ বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
বাংলাদেশে খুচরা (রিটেইল) ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি)। ফলে বহুজাতিক এই ব্যাংকে আর কোনো ব্যক্তি আমানত ও ঋণসংক্রান্ত সেবা পাবেন না। তবে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্তটি হুট করে কার্যকর করা হবে না। ধাপে ধাপে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে এই সেবা বন্ধ করা হবে। এইচএসবিসির গ্লোবাল এক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ থেকে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংকটি আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
খুচরা ব্যাংকিং সেবার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত হিসাব, গাড়ির ঋণ, বাড়ি কেনার ঋণ, বিমাসেবা, মেয়াদি বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত অর্থায়ন। এর মধ্যে প্রচলিত ও শরিয়াহ দুই ধরনের সেবা রয়েছে। এসব সেবায় এখন নতুন গ্রাহক যুক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির ওয়েবসাইটেও এ–সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সাল শেষে এইচএসবিসি বাংলাদেশের আমানত ছিল ২২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা এবং ঋণ ও অগ্রিম ছিল ১৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটির মুনাফা বেড়ে হয় ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। সারা দেশের ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় ব্যাংকটির ব্যবসাকেন্দ্র রয়েছে। সারা দেশে শাখা ও উপশাখা রয়েছে সাতটি। এ ছাড়া পাঁচটি ‘সিলেকট’ সেন্টারের মাধ্যমে বিশেষ ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে বহুজাতিক এই ব্যাংক। সারা দেশে ব্যাংকটির এটিএম বুথ রয়েছে ১১টি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে এইচএসবিসি জানিয়েছে, ব্যাংকটি বাংলাদেশে তাদের রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করছে। এই প্রক্রিয়া এ বছরের দ্বিতীয় অংশে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশে রিটেইল ব্যবসায় এইচএসবিসির বাজার অবস্থান ও এই ব্যবসার কৌশলগত অবস্থানকে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ধাপে ব্যাংকটি তাদের গ্রাহকদের অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করপোরেট ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবসা এ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে। বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসাটি এইচএসবিসির আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি মার্কেট হিসেবেই থাকছে। এইচএসবিসি গ্রুপ বাংলাদেশের করপোরেট ও ইনস্টিটিউশন ব্যাংকিং তথা করপোরেট গ্রাহকদের সেবা প্রদানকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং ওই ব্যবসায় ট্রেড ও ইনভেস্টমেন্টে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী গ্রুপটির কার্যক্রম আরও সহজতর করার একটি অংশবিশেষ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ঘোষণা করা হয়। যেসব দেশে এইচএসবিসির পরিষ্কার প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে, সেই সব দেশে ব্যাংকটি তার গ্রাহকদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদানে গুরুত্ব অব্যাহত রাখবে।
জানা যায়, খুচরা ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করলেও বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানিসহ করপোরেট ও কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসার প্রসার অব্যাহত রেখেছে ব্যাংকটি। ফলে ব্যাংকটির মুনাফাও বাড়ছে। এইচএসবিসি বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৪ সালে এক হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২২ সালে এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।
ব্যাংকের ২০২৪ সালের প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীতে বলা হয়েছে, সুদের আয় বৃদ্ধি, আমানতের খরচ কমা এবং বিনিয়োগ থেকে ভালো আয় হওয়ায় রেকর্ড মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির নিট সুদ আয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকায়। আমানতের ওপর সুদ ২০ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঋণ থেকে সুদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় এইচএসবিসি আয় করেছে ৯৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে মূলধন লাভও রয়েছে। এ আয় আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশে।
এইচএসবিসি ১৯৯৬ সালে ঢাকায় প্রথম শাখা চালু করে। ব্যাংকটির মূল প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি হোল্ডিংস পিএলসি। বাংলাদেশে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় গুলশানের লিংক রোডে।