জয়পুরহাটের কালাইয়ে নিখোঁজের সাত দিন পর চার বছরের শিশু রদিয়া আক্তার রুহির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের হিমাইল গ্রামে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাঙ্কে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। নিহত শিশু রুহি হিমাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে। 
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, বিচ্ছেদের পর আদালতের রায়ে রুহির জন্য মাসে দুই হাজার ৩০০ টাকা করে দিত বাবা। সে টাকা যাতে না দিতে হয়, সে জন্য তাকে বাবা ও সৎমাসহ সবাই মিলে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গতকাল শনিবার পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন।
ঘটনার পর প্রথমে শিশুর চাচা রেজাউল ইসলামের ছেলে রনি, সৎমা সোনিয়া আক্তার এবং আব্দুর রহমানের শ্বশুর পাঁচবিবির শালট্টি গ্রামের জিয়া কসাইকে রাতে আটক করে পুলিশ। শনিবার আব্দুর রহমানকেও আটক করা হয়। তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন।
পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, রুহি কালাইয়ের হিমাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের প্রথম পক্ষের মেয়ে। বিচ্ছেদের পর থেকে তাঁর প্রথম স্ত্রী একই গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকেন। রুহি মায়ের সঙ্গে থাকলেও প্রতিদিন দাদির সঙ্গে দেখা করতে বাবার বাড়িতে যেত। বিচ্ছেদের পর তার মা আদালতে মামলা করেন।
আদালত মোহরানা বাবদ তিন লাখ ১৪ হাজার টাকা ও সন্তানের খোরপোশ বাবদ মাসে দুই হাজার ৩০০ করে টাকা দেওয়ার রায় দেন। মোহরানার টাকা শোধ করলেও সন্তানের টাকা প্রতি মাসে দিতে হতো তার বাবাকে। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। গত ২৪ মে রুহি দাদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আর মায়ের কাছে ফেরেনি।
রুহির কথা জানতে চাইলে চাচা ও সৎমা জানায়, তার দাদি বাড়িতে না থাকায় তাকে মায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায়ও মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মা ও নানা-নানি। কোথাও না পেয়ে পরদিন ২৫ মে কালাই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা। এর পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেন।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুক্রবার রুহির বাবার দ্বিতীয় পক্ষের শ্বশুর জিয়া কসাইকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে স্বীকার করে, তাঁর জামাই (রুহির বাবা) আব্দুর রহমান, মেয়ে সোনিয়া আক্তার (রুহির সৎমা), রুহির চাচা রনি এবং তিনি মিলে শিশুকে হত্যা করে মরদেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলেছে। 
রুহির নানা আলম সরকার বলেন, ‘ছেড়ে দেওয়ার পর মা-মেয়ে দু’জনই আমার বাড়িতে আছে। অনেক কষ্ট করে তাদের ভরণপোষণ করাচ্ছি। ওরা কেন আমার নাতনিকে মেরে ফেলেছে?’ রুহির মা আরজিনা খাতুনের ভাষ্য, ‘স্বামী তালাক দিয়েছে, সন্তানকেও মেরে ফেলেছে। আমি কি নিয়ে বেঁচে থাকব।’
কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে এই সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

জামায়াতের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

একই দাবিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ