সেপটিক ট্যাঙ্কে শিশুর লাশ, বাবা-সৎমা গ্রেপ্তার
Published: 31st, May 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাইয়ে নিখোঁজের সাত দিন পর চার বছরের শিশু রদিয়া আক্তার রুহির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের হিমাইল গ্রামে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাঙ্কে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। নিহত শিশু রুহি হিমাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে।
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, বিচ্ছেদের পর আদালতের রায়ে রুহির জন্য মাসে দুই হাজার ৩০০ টাকা করে দিত বাবা। সে টাকা যাতে না দিতে হয়, সে জন্য তাকে বাবা ও সৎমাসহ সবাই মিলে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গতকাল শনিবার পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন।
ঘটনার পর প্রথমে শিশুর চাচা রেজাউল ইসলামের ছেলে রনি, সৎমা সোনিয়া আক্তার এবং আব্দুর রহমানের শ্বশুর পাঁচবিবির শালট্টি গ্রামের জিয়া কসাইকে রাতে আটক করে পুলিশ। শনিবার আব্দুর রহমানকেও আটক করা হয়। তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন।
পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, রুহি কালাইয়ের হিমাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের প্রথম পক্ষের মেয়ে। বিচ্ছেদের পর থেকে তাঁর প্রথম স্ত্রী একই গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকেন। রুহি মায়ের সঙ্গে থাকলেও প্রতিদিন দাদির সঙ্গে দেখা করতে বাবার বাড়িতে যেত। বিচ্ছেদের পর তার মা আদালতে মামলা করেন।
আদালত মোহরানা বাবদ তিন লাখ ১৪ হাজার টাকা ও সন্তানের খোরপোশ বাবদ মাসে দুই হাজার ৩০০ করে টাকা দেওয়ার রায় দেন। মোহরানার টাকা শোধ করলেও সন্তানের টাকা প্রতি মাসে দিতে হতো তার বাবাকে। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। গত ২৪ মে রুহি দাদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আর মায়ের কাছে ফেরেনি।
রুহির কথা জানতে চাইলে চাচা ও সৎমা জানায়, তার দাদি বাড়িতে না থাকায় তাকে মায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায়ও মেয়েকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মা ও নানা-নানি। কোথাও না পেয়ে পরদিন ২৫ মে কালাই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা। এর পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেন।
সন্দেহভাজন হিসেবে শুক্রবার রুহির বাবার দ্বিতীয় পক্ষের শ্বশুর জিয়া কসাইকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে স্বীকার করে, তাঁর জামাই (রুহির বাবা) আব্দুর রহমান, মেয়ে সোনিয়া আক্তার (রুহির সৎমা), রুহির চাচা রনি এবং তিনি মিলে শিশুকে হত্যা করে মরদেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলেছে।
রুহির নানা আলম সরকার বলেন, ‘ছেড়ে দেওয়ার পর মা-মেয়ে দু’জনই আমার বাড়িতে আছে। অনেক কষ্ট করে তাদের ভরণপোষণ করাচ্ছি। ওরা কেন আমার নাতনিকে মেরে ফেলেছে?’ রুহির মা আরজিনা খাতুনের ভাষ্য, ‘স্বামী তালাক দিয়েছে, সন্তানকেও মেরে ফেলেছে। আমি কি নিয়ে বেঁচে থাকব।’
কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ম্যাক্সওয়েল
আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন এই বিস্ফোরক ব্যাটার।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। এখন থেকে তিনি মনোযোগ দেবেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট এবং বিগ ব্যাশ লিগে।
২০১২ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দলে অভিষেক হয়েছিল ম্যাক্সওয়েলের। নিজের বিদায় নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাকে অপ্রত্যাশিতভাবেই শুরুতে দলে নেওয়া হয়েছিল। তখন ভাবতাম, হয়তো কয়েকটি ম্যাচ খেলে আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এরপর বাদ পড়া, ফিরে আসা, একাধিক বিশ্বকাপে খেলা এবং দারুণ সব দলের অংশ হওয়া—সব মিলিয়ে দারুণ এক যাত্রা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমার শরীর যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল যেন আমি দলের সঙ্গে সুবিচার করতে পারছি না। নির্বাচক জর্জ বেইলির সঙ্গে আলোচনা করেই আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল। করেছেন ৩৯৯০ রান, গড় ৩৩.৮১, স্ট্রাইকরেট ১২৬.৭০। ক্যারিয়ারে চারটি সেঞ্চুরি ও ২৩টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি বল হাতেও ৭৭টি উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার। ফিল্ডিংয়েও ছিলেন দারুণ, ক্যাচ নিয়েছেন ৯১টি।
তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ইনিংসটি এসেছে ২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে, যেখানে একা লড়াই করে অপরাজিত ২০১ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। অনেকেই এই ইনিংসকে ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা বলে মনে করেন।