মিষ্টি আলু দারুণ পুষ্টিকর খাবার। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বহু পুষ্টি উপাদান। শর্করাও আছে বেশ খানিকটা; তাই মিলবে অনেকটা ক্যালরিও। সেদ্ধ মিষ্টি আলু সহজপাচ্য। বাড়ন্ত শিশুর জন্য দারুণ খাবার। তবে খাদ্যতালিকায় যেকোনো খাবার যোগ করার আগে এর ভালোমন্দ বিবেচনা করা জরুরি, বিশেষত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। আর কীভাবে খাওয়া হলে পুষ্টি উপাদান দেহের সবচেয়ে বেশি কাজে আসবে, তা–ও জানা থাকা চাই। এমনটাই বলছিলেন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী। মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণের বিস্তারিত জেনে নিন তাঁর কাছ থেকেই।

কতটা ভিটামিন পাবেন

এটা ঠিক যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের যতটা ভিটামিন এ প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেকটাই বেশি পাবেন একটি মিষ্টি আলু থেকে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় ঠিক কতটা বেশি পাচ্ছেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব মেলানো কঠিন। নারী ও পুরুষের জন্য এই হিসাব আলাদা। আকার-আকৃতির জন্য মিষ্টি আলুর ওজনের সঙ্গে সঙ্গে পুষ্টি উপাদানেরও তারতম্য হয়। তাই একটি মিষ্টি আলু থেকে আপনি প্রয়োজনের ঠিক কতটা পাচ্ছেন, তা বলা মুশকিল। তবে একটি মাঝারি আকারের মিষ্টি আলু থেকে নিঃসন্দেহেই প্রয়োজনের বেশি ভিটামিন এ পেয়ে যাবেন। কতটা বেশি পেলেন, সেই হিসাব করা জরুরি নয়। ভিটামিন বি৬–ও পাবেন বেশ খানিকটা। তবে এতে ভিটামিন সি থাকলেও সেদ্ধ করার সময় উত্তাপে সেই ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়।

আরও পড়ুনশরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিটামিন বি-১২–এর শোষণ বাড়াবেন কীভাবে৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ভিটামিনের উপকার

রোজ একটি মিষ্টি আলু খেলে যে পরিমাণ ভিটামিন এ পাবেন, তা স্বাভাবিক অবস্থায় আপনার ত্বক ও চোখ ভালো রাখার জন্য যথেষ্ট। ভিটামিন এ অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই মিষ্টি আলু খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়বে। ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে ভিটামিন এ। মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন বি৬ স্নায়ু সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

আরও আছে যা

পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রনও পাবেন মিষ্টি আলুতে। পানি ও পর্যাপ্ত আঁশও মিলবে। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখা প্রয়োজন। সার্বিক সুস্থতার জন্য বাকি উপাদানগুলোও জরুরি। বিশেষত ত্বকের সুস্থতার জন্য চাই পানি। পর্যাপ্ত আঁশ গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। রক্তে খারাপ চর্বির মাত্রা কমবে। তবে উদ্ভিজ্জ উপাদান বলে মিষ্টি আলুর আয়রন দেহে খুব ভালোভাবে শোষণ না-ও হতে পারে।

আরও পড়ুনমুরগির হাড় চিবানো আসলেই কি ভালো০৮ নভেম্বর ২০২৪খেয়াল রাখুন ক্যালরির হিসাবনিকাশ

মিষ্টি আলুতে শর্করার পরিমাণ বেশি। অর্থাৎ ক্যালরির মাত্রাও বেশি। তাই তা নিয়মিত খেতে চাইলে অবশ্যই ভাত, রুটি বা অন্য কোনো শর্করাজাতীয় খাবারের পরিবর্তে খেতে হবে। রাতের মূল খাবার হিসেবে মিষ্টি আলু খাওয়া যেতে পারে, সঙ্গে থাকতে পারে মাছ কিংবা মুরগির মাংস। স্ন্যাকস হিসেবে মিষ্টি আলু খাওয়া যাবে না। কারণ, স্ন্যাকস হিসেবে মিষ্টি আলু খাওয়া হলে আপনার দেহের চাহিদার বেশি শর্করা গ্রহণ করা হয়ে যাবে। যোগ হবে বাড়তি ক্যালরি। এভাবে একসময় ওজন বাড়তে পারে যে কারও।

তা ছাড়া যাঁদের রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড (একধরনের চর্বি) কিংবা সুগারের মাত্রা বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, যদি তাঁরা মিষ্টি আলু গ্রহণ করেন স্ন্যাকস হিসেবে। বুঝতেই পারছেন, মিষ্টি আলুর উপকার পেতে হলে শর্করা এবং ক্যালরির হিসাবটা খেয়াল রাখা খুব জরুরি।

১০০ গ্রাম ভাত থেকে আপনি ১১২ কিলোক্যালরি পান, ১০০ গ্রাম মিষ্টি আলু থেকে পাবেন ৯৭ কিলোক্যালরি। পরিমাণ বুঝে খাওয়া হলে ভাত বা রুটির মতো খাবারের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে মিষ্টি আলু; কারণ, ভাত বা রুটি থেকে আপনি মিষ্টি আলুর মতো ভিটামিন বা খনিজ উপাদান পাবেন না।

আরও পড়ুনম্যাগনেশিয়াম-সমৃদ্ধ সুপার হেলদি ৮ খাবার৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য উপ দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ