আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন এই বিস্ফোরক ব্যাটার।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। এখন থেকে তিনি মনোযোগ দেবেন সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট এবং বিগ ব্যাশ লিগে।

২০১২ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দলে অভিষেক হয়েছিল ম্যাক্সওয়েলের। নিজের বিদায় নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাকে অপ্রত্যাশিতভাবেই শুরুতে দলে নেওয়া হয়েছিল। তখন ভাবতাম, হয়তো কয়েকটি ম্যাচ খেলে আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এরপর বাদ পড়া, ফিরে আসা, একাধিক বিশ্বকাপে খেলা এবং দারুণ সব দলের অংশ হওয়া—সব মিলিয়ে দারুণ এক যাত্রা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমার শরীর যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল যেন আমি দলের সঙ্গে সুবিচার করতে পারছি না। নির্বাচক জর্জ বেইলির সঙ্গে আলোচনা করেই আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল। করেছেন ৩৯৯০ রান, গড় ৩৩.

৮১, স্ট্রাইকরেট ১২৬.৭০। ক্যারিয়ারে চারটি সেঞ্চুরি ও ২৩টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি বল হাতেও ৭৭টি উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার। ফিল্ডিংয়েও ছিলেন দারুণ, ক্যাচ নিয়েছেন ৯১টি।

তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ইনিংসটি এসেছে ২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে, যেখানে একা লড়াই করে অপরাজিত ২০১ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। অনেকেই এই ইনিংসকে ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা বলে মনে করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ ল ন ম য ক সওয় ল ন ম য ক সওয় ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ