‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ সাড়া জাগানো গানের গীতিকার এবং গায়ক আপেল মাহমুদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কিনা, সে বিতর্কের অবসান হতে চলেছে।

সোমবার কুমিল্লা সার্কিট হাউসে শুনানির জন্য তাঁকে ডাকা হলে তিনি তদন্ত দলের কাছে প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করেন।
শুনানি শেষে আপেল মাহমুদ বলেছেন, ‘আমি যে আপেল মাহমুদ, তা জীবিত থেকেই প্রমাণ করেছি। আমি মুক্তিযোদ্ধা নই, এমন অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকার) সদস্যরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’ 

সার্কিট হাউসে শুনানি শেষে জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, গীতিকার আপেল মাহমুদ নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করতে পেরেছেন। আর আপেল মাহমুদ বলেন, ৩ নম্বর সেক্টরের সরাসরি যোদ্ধা তিনি। ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের কমান্ডে যুদ্ধ করেছেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর স্বাধীন বাংলা বেতার কর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন গীতিকার আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে তিনি ‘মুক্তিযোদ্ধা নন’ বলে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপপরিচালক (উন্নয়ন) ফাতেমা খাতুন তাঁর স্বপক্ষে যাবতীয় দলিল ও সাক্ষ্য উপস্থাপনের জন্য নোটিশ দেন।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সোনারচর এলাকার সন্তান আপেল মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গানের গায়ক হিসেবে বেশি পরিচিত। এ ছাড়া ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য গান। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০০৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

শুনানি শেষে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, ৫ আগস্টের পর কুমিল্লা জেলার ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধা নন, এমন অভিযোগ ওঠে। সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে দুটি কমিটিতে শুনানি হয়। সেখানে আপেল মাহমুদ প্রমাণ করেছেন, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যদি শুধু গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকতেন, তাহলেও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পেতেন। তবে তিনি কাগজে প্রমাণ করেছেন, সম্মুখ যোদ্ধাও ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন দ ধ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ