মাদ্রাসা শিক্ষকের পিটুনিতে ছাত্রের হাত ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি
Published: 3rd, June 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হেফজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার উপজেলার তারাশী-পবনাড়পাড় এলাকার ওই মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
পড়া না পারায় বেত দিয়ে বেধড়ক মারধর ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় হামিম শেখ (৮) নামের এক ছাত্রের বাম হাত ভেঙে গেছে। আহত হামিম শেখ গোপালপুর গ্রামের রুহুল আমিন শেখের ছেলে।
জানা যায়, মাদ্রাসার হাফেজ মো.
হামিম শেখ জানায়, হুজুর আমাকে অনেক মারছে, পড়া পারিনি বলেই। শুধু আমাকে না, অন্যদেরও পেটায়। বাড়িতে বলতেও দেয় না। আগে অনেকবার মারলেও কাউকে বলিনি।
নানী সোনাই বেগম বলেন, আমি খাবার দিতে গিয়ে দেখি হামিম কাঁদছে। শিক্ষক বললেন পড়ে গেছে। বাড়ি এনে জামা খুলে দেখি সারা গায়ে বেতের দাগ। হাত ফুলে গেছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তবে মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ মুফতি আব্দুল্লাহ আল হাফিজ ঘটনার সত্যটা নিশ্চিত করে বলেন, ওস্তাদ শাসনের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছেন। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. কুমার মৃদুল দাস বলেন, “শিশুটির হাত ভেঙে গেছে। চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এক মাসের মধ্যে সে সুস্থ হয়ে উঠবে।”
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহিম খলিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক