কক্সবাজারে হাট থেকে ফেরার পথে গরু লুট, বাধা দিতে গিয়ে খুন তরুণ
Published: 3rd, June 2025 GMT
কক্সবাজারের রামুতে কোরবানির গরু কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা দুটি গরু লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে মো. সালাহউদ্দিন পারভেজ (২২) নামে এক তরুণ খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দুজন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ফরেস্ট অফিস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত পারভেজ ইউনিয়নের ফুলনিরচর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে। আহতরা হলেন উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নের শাহ আহম্মদ সিকদার পাড়ার আহম্মদ হোসেন ও তাঁর ছেলে ফোরকান আহমদ। এ ঘটনায় পুলিশ আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেহেদী হাসান ও শাহেদ ইমরান নামে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি লুট করা গরু দুটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানির জন্য হাট থেকে কিনে বাড়িতে নেওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা দুটি গরু লুটের চেষ্টা চালায়। এ সময় বাধা দিলে তিনজনকে ছুরিকাঘাত করে তারা। এতে সালাহউদ্দিন পারভেজ নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। লুট করা গরু দুটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।
সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের একজন ফোরকান আহম্মদ বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় গর্জনিয়া বাজার থেকে কোরবানির জন্য দুটি গরু কেনেন তাঁরা। গাড়ি না পাওয়ায় তাঁরা গরু দুটি নিয়ে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাউয়ারখোপের জাদিপাহাড় এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় যুবক জাহেদের নেতৃত্বে কয়েকজন গরু দুটি লুটের চেষ্টা চালায়।
ফোরকান আহম্মদ আরও বলেন, গরু লুট করতে এলে সন্ত্রাসীদের তাঁরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। হইচই শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে গরু দুটি নিয়ে তাঁরা তিনজন আবার হাঁটতে শুরু করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর জাহেদের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী আবার তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা দা ও ছুরি দিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। ছুরিকাঘাতে সালাহউদ্দিন পারভেজ গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় তাঁর বাবা আহম্মদ হোসেন ও তিনি নিজেও আহত হন। এ সময় সন্ত্রাসীরা গরু দুটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে পারভেজকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বর্তমানে ফোরকান ও তাঁর বাবা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ছ ফ রক ন ল ট কর এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
কোহলি কি জানতেন, বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে
রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন—এ রকম একটা কথা প্রচলিত আছে।
প্রতীকী অর্থে এর সঙ্গে মিল রেখে কেউ কেউ বলতে পারেন—এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে যখন মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যাচ্ছিলেন, বিরাট কোহলি তখন ভেতরে উৎসব করছিলেন!
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রাজপথে কাল কী ঘটেছে, তা অনেকেরই জানা। আইপিএলের ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই শহরের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, যা কোহলিরও প্রথম আইপিএল শিরোপা।
এমন অর্জনের পর স্বাভাবিকভাবেই বেঙ্গালুরু সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করেছে। তাই শিশু থেকে বুড়ো—সব বয়সের মানুষ চ্যাম্পিয়ন দলকে বরণ করে নিতে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। কিন্তু বেঙ্গালুরুবাসীর সেই আনন্দ বিষাদে রূপ নিয়েছে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে ১১ জন প্রাণ হারানোয় ও অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনায়।
মর্মান্তিক এই ঘটনা কাল ভারতের সব সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ শিরোনাম হলেও ‘শো মাস্ট গো অনের’ মতো করে কোহলি-পতিদার-ক্রুনাল-সল্টরা যথারীতি নিজেদের মাঠে উৎসব চালিয়ে গেছেন। এ নিয়ে অনেকেই বেঙ্গালুরু মালিকপক্ষের ওপর দায় চাপাচ্ছেন, দোষ দিচ্ছেন কোহলিদেরও।
কিন্তু ভারতের সাবেক পেসার অতুল ওয়াসনের দাবি, স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে—এই খবর কোহলির কানে তৎক্ষণাৎ পৌঁছায়নি। জানলে অবশ্যই উৎসব থামিয়ে দিতেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআইকে অতুল বলেছেন, ‘আমি কোনোভাবেই এটা বিশ্বাস করি না যে, কোহলি ও তার দলের অন্যরা খেলোয়াড়েরা যদি জানত বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে, তাহলে তারা তখনই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থামিয়ে দিত।’
বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি নিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআইকেও নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অতুল ওয়াসন, ‘বাইরে কী ঘটছে, কোহলি তা তখনই জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসত। তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না।’
আরও পড়ুনকোহলিদের উৎসবে ১১ জনের মৃত্যু: দায় কার—ফ্র্যাঞ্চাইজি না রাজ্য সরকারের৩ ঘণ্টা আগেভারতের হয়ে ৪ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে খেলা ওয়াসনের দাবি, শুধু রাজনীতিবিদ আর করপোরেট জগতের মানুষদের পক্ষেই হৃদয় বিদারক ঘটনার পরও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, ‘রাজনীতিবিদ ও করপোরেটদের সম্পর্ক আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, তারা নির্মম এবং তাদের চামড়া মোটা। আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজিও তাই। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা এসবের পরোয়া করে না। কারণ, তাদের খরচের বিস্তারিত হিসাব ও রাজস্ব দেখাতে হয়। তারা হয়তো (বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে) জানত। এখনো যোগাযোগের ঘাটতি ছিল।’
কোহলি যে সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়টি অনেক দেরিতে জেনেছেন, তা বোঝা গেছে ঘটনার অনেক পরে রাত ১১টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে। ভারত ও বেঙ্গালুরুর কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান লিখেছেন, ‘ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বলার মতো অবস্থা নেই। খুবই ভয় পেয়েছি।’