ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পরিহার করা দেশের স্বার্থের বিরোধী। আজ বুধবার এক ভাষণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি ইরানের আত্মনির্ভরতা ও ‘আমরাই পারি’ দর্শনের পরিপন্থী।

এমন এক সময়ে খামেনির এই বক্তব্য এল, যখন ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পাঁচ দফা আলোচনা শেষে ওয়াশিংটনের একটি নতুন পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পৌঁছেছে তেহরান। প্রস্তাবে ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ এবং মজুত থাকা যাবতীয় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার শর্ত রাখা হয়েছে।

আজ বুধবার ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে আলী খামেনি বলেন, ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আমাদের পরমাণু কর্মসূচির মূল চাবিকাঠি। শত্রুরা এটিই লক্ষ্য করেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা শতভাগ নিজেদের স্বার্থের বিরোধী উল্লেখ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘আমেরিকার ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অহংকারী নেতারা বারবার আমাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধের দাবি জানান। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে কি না, তা নির্ধারণ করার আপনারা কে?’

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন প্রস্তাব মেনে না নিলে ইরানের ওপর চাপ আরও বাড়ানো হবে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের মতো ইরানের ওপর আবারও ‘সর্বোচ্চ চাপ’ দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলোচনায় ফল না এলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকট, জ্বালানি ও পানির ঘাটতি এবং ইসরায়েলের সঙ্গে আঞ্চলিক সংঘাতে বিপর্যস্ত তেহরান মনে করছে, নতুন প্রস্তাবে তাদের বাস্তব সংকটগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) এক গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান তিন মাসের ব্যবধানে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির এ মাত্রা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার খুব কাছাকাছি উল্লেখ করে সংস্থাটি বলেছে, দেশটি ৪০৮ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা বিশ্বের কোনো পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশের জন্য নজিরবিহীন।

২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ), যা সংক্ষেপে ইরান পরমাণু চুক্তি নামে পরিচিত। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।

চুক্তির বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। ফলে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু সফল হননি। গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে তেহরানের সঙ্গে নতুন পরমাণু চুক্তির চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে দেশ দুটির কর্মকর্তাদের মধ্যে ওমান ও অস্ট্রিয়ায় কয়েক দফায় অপ্রত্যক্ষ বৈঠক হয়েছে।

আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউর ন য় ম প রস ত ব ইউর ন য র জন য নত ন প পরম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি

অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।

গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।

লিভারপুলের অনুশীলনে ভার্জিল ফন ডাইক ও মোহাম্মদ সালাহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ