সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের দাবিতে ২৮ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাতে দলটির নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ এক বিবৃতিতে দলের এ কর্মসূচির কথা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গোটা জাতি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সংস্কারে সরকারের সদিচ্ছার কথা শোনা গেলেও তা এখনো দৃশ্যমান হয়নি। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে সংস্কার প্রশ্নের চেয়ে অন্যান্য বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে রাষ্ট্র নাগরিকদের প্রতিষ্ঠান হওয়ার বদলে স্বার্থান্বেষী মহলের গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিলের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রকে জনতার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আর সে জন্য দরকার সংস্কার।

মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, পতিত স্বৈরতন্ত্র জুলাই-আগস্টে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। আরও কয়েক হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে, অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিগত ১৫ বছরে শত শত মানুষকে গুম করেছে, খুন করেছে। দেশের হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এমন সংঘবদ্ধ নৃশংস অপরাধী চক্রের বিচার হওয়া জনতার প্রাণের দাবি। বিচারের কাজ শুরু হলেও তার গতি শ্লথ, যা মানুষকে আশাহত করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, নির্বাচন আয়োজন করা হয় যাতে দেশ পরিচালনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটানো যায়। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত পদ্ধতিগতভাবেই রাষ্ট্র পরিচালনায় উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এটা গণতন্ত্র, ইনসাফ ও যুক্তিবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চায়, রাষ্ট্রের মৌলিক ও প্রয়োজনীয় সংস্কার, পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। এসব দাবিকে সামনে রেখে ২৮ জুন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী ময়দানে মহাসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পরের ম্যাচে অন্য খেলা দেখাবেন আনচেলত্তি 

অনেক বড় মুখ করে তাকে আনা হয়েছে ব্রাজিলে কোচ করে। অথচ প্রথম ম্যাচেই ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোল শুন্য ড্র করেছে আনচেলত্তির ব্রাজিল। স্বপ্নের মতো যাত্রা শুরুর যে আশা করেছিল সমর্থকরা তাতে নিশ্চিত ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। 

অবশ্য এতে হতাশ নন ব্রাজিলের ইতালিয়ান কোচ। ‘আমাদের অনেক বিশ্বমানের ফুটবলার রয়েছে। তবে প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পায়নি। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি পরের ম্যাচে আমাদের কাছ থেকে আক্রমনাত্মক ফুটবল দেখতে পাবে সমর্থকরা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আমরা রাফিনিয়াকে মিস করেছি। ঘরের মাঠে পরের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে অন্যরকম খেলা হবে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আমাদের আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। যেটা আমরা পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে আশা করছি।’ 

ইকুয়েডরের কাছে পয়েন্ট খোয়ানোর পর আনচলত্তি এখন তাকিয়ে ১১ জুন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটির দিকে। এই মুহুর্তে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে রয়েছে ব্রাজিল। হাতে থাকা তিনটি ম্যাচের পর তালিকার ছয় নম্বরে থাকতে পারলেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত। সেই সম্ভবনাও প্রবল।

তবে ব্রাজিলের যে খেলার মান তা নিয়েই সমর্থকরা চিন্তিত। বিশেষ করে এদিন ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোলমুখে মাত্র তিনটি শট নিতে পেরেছিল ব্রাজিল। বল দখলও ইকুয়েডের চেয়ে কম ৪৮ শতাংশ। রির্চালিসন কিম্বা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কম্বিনেশনেও ছন্দ দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে ম্যাচের পর ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকদের কাছে অনেক কিছুরও ব্যাখা দিতে হয় আনচলত্তিকে। ‘আক্রমনে আমাদের ধার দেখা যায়নি, তাছাড়া ইকুয়েডরের ডিফেন্সও ছিল শক্তিশালি। বল চ্যালেঞ্জিং কিম্বা লাইনের ধারে জায়গা করতে দেয়নি তারা। তবে আমি কোন অজুহাত দাড় করাতে চাই না, শুধু এটুকু বলতে চাই এন্ড কন্ডিশনে খেলাটা সহজ ছিল না।’

সারা জীবন ইউরোপে কোচিং করিয়েছেন, প্রায় ১৮০০ ক্লাব ম্যাচে তিনি কোচ ছিলেন। কিন্তু এবারই প্রথম আর্ন্তজাতিক ম্যাচে ডাগআউটে দাড়ালেন। ইউরোপ আর লাতিনের কন্ডিশনে কতটা পার্থক্য দেখলেন তিনি? জানতে চেয়েছিলেন এক স্থানীয় সাংবাদিক। ‘এখানকার সার্বিক পরিবেশ অসাধারন। দর্শকরা তাদের দলকে আবেগ দিয়ে সমর্থন করে। সব কিছুই উচু পর্যায়ে। আশা করছি পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে আমরা এই সমর্থনটাই পাবো।’ 

তাহলে কি ঘরের মাঠ ইকুয়েডর বাড়তি সুবিধা পেয়েছে গ্যালারির? ‘আমি জানি না। তবে মাত্র অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের লম্বা সফর করে এখানে আসতে হয়েছে। যদিও শারীরিক ভাবে সবাইকে ফিট মনে হয়েছে। তবে মাঠে আমাদের আক্রমন ধারালো ছিল না।’ 

আকারে ইঙ্গিতে তিনি ফুটবলারদের ভ্রমন ক্লান্তি এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ঘাটতির কথাই বলছেন। তাছাড়া এদিন মনের মতো মাঠও সাজাতে পারেননি আনচেলত্তি। বিশেষ করে কার্ড সমস্যা থাকায় এদিন রাফিনিয়াকে নামাতে পারেননি। ‘জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ হিসাবে আমার কাছে এটা ছিল বিশেষ কিছু। ব্রাজিল ফুটবল সংস্থার কাছ থেকে যে অভ্যর্থনা পেয়েছে তাতে সম্মানিত বোধ করেছি। তবে ম্যাচের ফল আমাদের প্রত্যাশা মতো হয়নি।’ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও স্বীকার করছেন সে কথা। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের নতুন কোচ প্রথম ম্যাচেই সব কৌশল দেখাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ