নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল কবির জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কারাগারের প্রধান ফটক থেকে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার আগে নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে ওই আরেকটি মামলায় তাঁকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

খাইরুল কবিরের পরিবারের অভিযোগ, হয়রানি করতে তাঁর বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় তিনি জামিন পেলেও পুলিশ তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করেছে।

থানা-পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বারহাট্টা থানায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত চারটি নাশকতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। ওই চারটি মামলাতেই খাইরুল কবিরকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকা থেকে র‍্যাব-১৪ খাইরুল কবিরকে আটক করে। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এসব মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গতকাল সন্ধ্যার আগে কারাগার থেকে বের হন। কিন্তু প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়াতেই নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ আবারও তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, খায়রুল কবিরকে কুড়পাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শহরের ছোট বাজার এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাঁকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত নেত্রকোনায় ১০টি থানায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৬৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬ হাজারের বেশি আসামি আছেন। এর মধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন ত রক ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ