দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তিন বোমার খবরে ভুতুড়ে নগর হয়ে গেল কোলন
Published: 5th, June 2025 GMT
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বোমা নিয়ে জার্মানির কোলন শহরে আতঙ্কের কারণে ২০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শহরটির প্রায় অর্ধেক অংশ গতকাল বুধবার হঠাৎই স্থবির ও জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে। অবশ্য আড়াই টন ওজনের তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয় করার পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লোকজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।
গতকাল বুধবার সকালে কোলন শহরের ডয়ট্জ এলাকায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের তিনটি অবিস্ফোরিত বোমা পড়ে থাকার সংবাদ পাওয়া যায়। এসব বোমা নিষ্ক্রিয় করতে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে তাৎক্ষণিক নিজ নিজ বাসা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়।
পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা অবিরাম মাইকে এই ঘোষণা দিতে থাকলে শহরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ১০ লাখের বেশি মানুষের কোলন শহরের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী সময়ে এটিই সবচেয়ে বড় ধরনের সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
গতকাল বিকেল থেকেই বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বিশেষজ্ঞরা অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেন। বোমা পাওয়া কোলন শহরের ডয়ট্জ এলাকার চারপাশে প্রায় এক হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে ‘স্পারজোন’ বা চলাচল নিষিদ্ধ এলাকা তৈরি করা হয়। ওই এলাকায় বসবাসকারী সব বাসিন্দাকে তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে বন্ধু, আত্মীয় বা শহর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়।
এসব অঞ্চলের মধ্যে ছিল কোলনের পুরোনো শহরাংশ, কয়েকটি স্কুল, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, ডে-কেয়ার সেন্টার এবং প্রায় ৬০টি হোটেল। দুপুরের পর শহরের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ওই এলাকায় ঘুরে ঘুরে সবাইকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করেন। এলাকা জনশূন্য হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট কাজ শুরু করে।
এ ধরনের বড় অভিযানের কারণে কোলনের রাইন নদীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সেতু ও দক্ষিণ দিকের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে শহরের যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটা থমকে যায়। এ ছাড়া জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেডি টেকলেব্রহানের নির্ধারিত শো–ও বাতিল করতে হয়।
শহর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনটি বোমা একসঙ্গে পাওয়ার কারণেই মানুষের জীবন রক্ষার তাগিদে অনেক লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলেও জার্মানিতে মাটির নিচে এখনো বহু অবিস্ফোরিত বোমা রয়ে গেছে, বিশেষ করে বড় বড় শহরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী লাখ লাখ বোমা ফেলেছিল। অনেক বোমা তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরিত হয়নি এবং বছরের পর বছর মাটির নিচে রয়ে গেছে। নির্মাণ কাজ বা অন্য কারণে সেগুলো আবিষ্কৃত হলে সঙ্গে সঙ্গে এলাকা খালি করে নিরাপদভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ ক র য় কর ন শহর শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ায় মহিলা দলের নেত্রীকে মারধর, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
চাহিদামতো ভিজিএফের স্লিপ না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিয়েছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি মালেকা বেগম। ওই ঘটনার জেরে মারধরের শিকার হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ভিজিএফের চাল নিতে আসা নারীদের হামলায় মালেকা বেগম আহত হয়েছেন।
এদিকে মালেকা বেগমের ওই অভিযোগের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার লোকজন। বিকেল চারটা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে মালেকা বেগমকে মারধর করা হয়। পরে তিনি তজুমদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি ইউপির সাবেক সদস্য। ওই ঘটনা সম্পর্কে মালেকা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিনের কাছে ঈদে বরাদ্দ ভিজিএফের ১০০টি স্লিপ চেয়েছিলাম। তিনি ৪০ জনের তালিকা দিতে বলেছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম হাওলাদারের ভাই কালিমুল্লাহ ও ইউপির দফাদার মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল নারী তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। তাঁরা তাঁর ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে বিএনপি নেতা ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ‘ওই দিন (মঙ্গলবার) নারীদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁরা এসে পরিষদে তালা মারা দেখেন এবং মালেকা বেগমকে তালা খুলে দিতে বলেন। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মালেকা বেগম হতদরিদ্র নারীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। তখন তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বা বিএনপির কেউ জড়িত নন।’
চাঁচড়া ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্রের নামে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল এসেছে। মহিলা সভাপতি (মালেক বেগম) একাই ১০০টি স্লিপ দাবি করেন। তাঁকে বলেছিলাম, আইডি কার্ড জমা দেন, চেষ্টা করব। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) সাড়ে ১০টার সময় পরিষদে গিয়ে জানতে পেরেছি তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’