১২ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই কোরবানির সব বর্জ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অপসারণ করতে পারবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এমন আশাবাদ জানিয়েছেন। শনিবার ডিএসসিসির ৭৫ ওয়ার্ডে একযোগে কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় তিনি এ কথা বলেন। এ বছর কোরবানির বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ বাধাগ্রস্ত হবে না বলেও মনে করেন তিনি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ কলাবাগান শিশু পার্ক-সংলগ্ন সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)পরিদর্শনের সময় বলেন, শহরে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না হলে দুর্গন্ধ ছড়ায়, এমনকি রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে। তবে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর কোরবানির বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ বাধাগ্রস্ত হবে না। 

ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, কোরবানির বর্জ্য অপসারণে তাদের ১০ হাজারের বেশি কর্মী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। ৭৫টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কনটেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ মোট দুই হাজার ৭৯টি যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে।

কলাবাগানে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো.

রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া, উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আবুল হাসান, ডিএসসিসি সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক রব ন ড এসস স উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে

চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
  • স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস করলেন শিক্ষার্থীরা
  • প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচের পরও ডুবছে চট্টগ্রাম