আইপিএল টেস্ট ক্রিকেটের পাঁচ স্তর নিচে, বিরাটের মন্তব্যে রাসেলের ‘জবাব’
Published: 8th, June 2025 GMT
১৮ বছরের অপেক্ষার পর বিরাট কোহলি পেয়েছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। এই শিরোপা তার জন্য কতটা অরাধ্য তা ক্রিকেটে খানিকটা মনোযোগ দেওয়া সবারই জানা। কিন্তু আইপিএলের অবস্থান এবং টেস্ট ক্রিকেটের বিশালত্ব ফাইনালের মঞ্চে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিরাট।
১৪ বছরে ১২৩ টেস্ট খেলা বিরাট আইপিএল জেতার মঞ্চে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন প্রকাশ করেন, ‘‘কিন্তু তারপরও এটা (আইপিএল) টেস্ট ক্রিকেট থেকে পাঁচ স্তর নিচে। টেস্ট ক্রিকেটকে আমি এতটাই মূল্য দিই, এতটাই ভালোবাসি।’’
বিরাটের টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা, নিবেদনকে বেশ ভালোভাবেই নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। তবে অবস্থান ভেদে ক্রিকেটের গুরুত্ব একেকরকম সেই বিষয়টিও সামনে এনেছেন রাসেল।
আরো পড়ুন:
আইপিএলের ফাইনালে শ্রেয়াস আইয়ারের আউট ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’!
বিরাটদের পক্ষে বাজি ধরে ১.
সারা বিশ্বে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ফেরি করে বেড়ান রাসেল। আজ এই ফ্রাঞ্চাইজি লিগে ও কাল অন্যটায়। লাগাতার টি-টোয়েন্টি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলছেন এমন সময়ও কাটিয়েছেন তিনি। দেশের ক্রিকেট বাদ দিয়ে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার রেকর্ডও আছে। তার কথায় মনে হলো, বাস্তবতার মুখোমুখিতেই ক্রিকেটের অন্য ফরম্যাট থেকে টি-টোয়েন্টিকে বেছে নিয়েছেন তিনি।
গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাসেল বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি আপনি যদি ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মতো দেশ থেকে আসেন, যেখানে টেস্ট খেলোয়াড়দের যত্ন নেওয়া হয়, তাহলে সেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।’’
‘‘এই খেলোয়াড়েরা টেস্ট ক্রিকেট খেলতে মোটা অঙ্কের কেন্দ্রীয় চুক্তি পায়, বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পায়। হ্যাঁ, তারাও খেলতেই চায়। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়? আপনি হয়তো ৫০ বা ১০০টা টেস্ট খেলবেন, কিন্তু অবসরের পর দেখবেন, দেখানোর মতো বিশেষ কিছু নেই।’’
২০১০ সালে রাসেলের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে। সেটাই তার একমাত্র টেস্ট। টেস্ট ক্যারিয়ার বড় করতে না পারার কারণ হিসেবে নির্বাচকদের দায় দিচ্ছেন তিনি, ‘‘আমাকে কার্যত টেস্ট দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তারা আমাকে সাদা বলের খেলোয়াড় হিসেবেই দেখেছিল, ব্যস সেটাই ছিল বাস্তবতা।’’
এ নিয়ে অবশ্য আফসোসও নেই তার, ‘‘আমি একজন পেশাদার। এটা (টেস্ট) আমার যাত্রার অংশ ছিল না। আমার কোনো আফসোস নেই। কারণ, আমি নিজে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিইনি।’’
এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়জন ক্রিকেটার ১০ বা এর বেশি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট জিতেছেন। তাদের একজন রাসেল। তারকা এই অলরাউন্ডারের কাছে অন্যদের বিনোদন দেওয়ার আগের নিজের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা বেশি জরুরী, ‘‘অবশ্যই আপনি চাইবেন এমন একটা জীবন, যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে বাঁচা যায় এবং পরিবারকে ভালোভাবে দেখাশোনা করা যায়।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
আরো পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।
তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।
পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।
এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।
আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।
এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।
ঢাকা/আমিনুল