বহুবছর আগে বিজ্ঞানীরা সিসমোমিটার ব্যবহার করে পৃথিবীর স্পন্দনের খোঁজ পান। মাইক্রোসিজম নামে পরিচিত এ ঘটনা প্রথম ১৯৬০ দশকে লক্ষ্য করা যায়। এই স্পন্দনের উৎপত্তিস্থল পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলের কাছে গিনি উপসাগরে।

আমাদের পায়ের নিচে কোথাও কোথাও এই স্পন্দন হচ্ছে। পৃথিবী প্রতি ২৬ সেকেন্ডে শান্তভাবে ও ছন্দোবদ্ধভাবে স্পন্দিত হচ্ছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এই মৃদু কম্পন মানুষের পক্ষে অনুভব করা অসম্ভব। বিভিন্ন মহাদেশজুড়ে রাখা সিসমোমিটার এই রহস্যময় ‘হৃৎস্পন্দনের’ অস্তিত্ব টের পায়। এই স্পন্দন কেন হচ্ছে তার কোনো নিশ্চিত ব্যাখ্যা এখনো জানা যায়নি।

১৯৬০ দশকের গোড়ার দিকে ভূপদার্থবিদ জ্যাক অলিভার প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন এই স্পন্দন। এর নাম দেওয়া হয় মাইক্রোসিজম। এ ঘটনা নিরক্ষীয় আটলান্টিক মহাসাগরের কোথাও কোথাও শনাক্ত করা হয়। বিভিন্ন সময় ভেদে এই স্পন্দনকে আরও শক্তিশালী হতে দেখা যায়। প্রথম দিকে অলিভারের পর্যবেক্ষণকে তাত্ত্বিকভাবে বর্ণনা করা হতো। ২০০৫ সালে কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ডিজিটাল সিসমিক ডেটা ব্যবহার করে একই ধরনের সংকেতের দেখা পান। তখন থেকেই স্পন্দনের রহস্য আবারও বৈজ্ঞানিক গল্প-আড্ডায় চলে আসে। এই কম্পনের শনাক্তকারী দলের প্রধান ভূকম্পনবিদ মাইক রিটজওলার বলেন, আমরা অদ্ভুত রকমের ধারাবাহিক ও স্থায়ী কিছুর দেখা পাই। পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে গিনি উপসাগরে এই স্পন্দন শনাক্ত হয়।

তত্ত্ব অনুসারে এই স্পন্দন ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরের মহাদেশীয় তাক বা কন্টিনেন্টাল শেলফের ওপর শক্তিশালী সমুদ্রের তরঙ্গের আঘাতের ফলাফল বলা হয়। ২০১৩ সালে চীনা বিজ্ঞানীরা নতুন এক তত্ত্বের প্রস্তাব দেন। বনির উপকূলে সাও টোম দ্বীপের কাছে এক আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের ওপর নজর রাখার সময় এই স্পন্দনের উৎপত্তির কেন্দ্রের খোঁজ মেলে বলে দাবি করা হয়।

কয়েক দশক ধরে গবেষণা ও বিভিন্ন কোণ থেকে ঘটনাটি পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানী রিটজওলার বলেন, ‘আমরা এখনো মৌলিক ব্যাখ্যার জন্য অপেক্ষা করছি। একে অনেকেই কৌতূহল–জাগানো ধাঁধা বলে অভিহিত করেছেন। সমুদ্রের ঢেউ আর আগ্নেয়গিরির পাথরের নিচে লুকিয়ে থাকা এই রহস্যের সমাধানের জন্য ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩

দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ