বেলুনে গ্যাস ভরার সময় বিস্ফোরণে প্রাণ গেল স্ত্রীর, স্বামীর অবস্থাও সংকটাপন্ন
Published: 9th, June 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় বিস্ফোরণে সুবন্যা আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মধ্য চারিগ্রাম গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সুবন্যা উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য চারিগ্রাম গ্রামের আরিফ হোসেনের স্ত্রী। দুর্ঘটনায় আরিফ হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
সিঙ্গাইর থানা–পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্য চারিগ্রাম গ্রামের আরিফ ও তাঁর স্ত্রী সুবন্যা বিভিন্ন গ্রামীণ মেলা ও অনুষ্ঠানে বেলুন বিক্রি করেন। আজ সকাল ১০টার দিকে বাড়ির উঠানে সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ভরছিলেন এই দম্পতি। এ সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে সুবন্যা ও আরিফ গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে সুবন্যার মৃত্যু হয়। আহত আরিফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিক আজম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর বিষয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় বিস্ফোরণে আনোয়ার ব্যাপারী নামের এক বেলুন ব্যবসায়ী নিহত হন। ওই ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?