জনপরিসরে আপত্তিকর বক্তব্য, এনসিপি নেতাকে শোকজ
Published: 11th, June 2025 GMT
জনসমক্ষে আপত্তিকর ও অসাংগঠনিক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য জোবাইরুল আলম মানিককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি। মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫২ মিনিটে এনসিপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রকাশ করা হয়।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘সোমবার চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আপনার একটি আপত্তিকর ও অসাংগঠনিক বক্তব্য কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির নজরে এসেছে। আপনার এমন বক্তব্য জনপরিসরে এনসিপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে এবং পার্টিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছে।’
গত সোমবার আনোয়ারার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনসিপি। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সদস্য জোবাইরুল আলম। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলব, ১৬ বছরের একজন মাফিয়াকে হটাতে পারছে। আমাদের বুঝ দিয়ে আবার যদি কেউ মাফিয়া হয়ে উঠতে চায়; আমরা তাদের বলব, এখন বাংলাদেশ যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই।’
কারণ দর্শানোর নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। কেন তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল-আমিনের কাছে লিখিত আকারে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোবাইরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রের একটি চিঠি আমি পেয়েছি। কেন্দ্র যা যা ব্যাখ্যা চেয়েছে, সেটি আমার দিক থেকে আমি দেব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সংক্রমণ রোধে এখনই পদক্ষেপ নিন
চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে বৈকি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করি।
সরকারের পক্ষ থেকে সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনপরিসরে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের ছুটি থেকে ফেরা যাত্রীদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে হবে না; প্রতিটি জনপরিসরে এটি কার্যকর করতে হবে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত চারজনের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর চলতি মাসে এ পর্যন্ত ২৬ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। পুরো মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০। গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজন মারা যান। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ নম্বরে করোনাবিষয়ক কলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এটা করোনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ারই নমুনা।
কিন্তু জনগণ সচেতন হলেই হবে না। করোনা পরীক্ষা ও টিকা সরবরাহের কাজটি করতে হবে সরকারকেই। জনস্বাস্থ্যবিদেরা করোনার সংক্রমণ রোধে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার কিটের মজুত থাকার কথা বললেও বাস্তবে তা নেই। প্রথম আলোর প্রতিবেদক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সেখানে করোনা পরীক্ষার কিট নেই। রাজধানীর তিন বড় হাসপাতালের অবস্থা যখন এই, অন্যান্য হাসপাতালের চিত্র সহজেই অনুমেয়।
আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা যে কত দুর্বল, সেটা বিগত করোনা মহামারির সময় হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গেছে। করোনা পরীক্ষা থেকে চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এবারও যাতে সে রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সরকারের আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন। আর কাজটি একা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নয়; জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সংস্থা ও বিভাগকে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের হাতে এখন ফাইজারের তৈরি ৩১ লাখ করোনার টিকা আছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ ডোজ ফাইজারের টিকা সব জেলায় পাঠানো হয়েছে, যার মেয়াদ শেষ হবে ৬ আগস্ট। এখন হাতে আছে আসলে ১৪ লাখ টিকা।
করোনার সম্ভাব্য বিস্তার রোধে অবিলম্বে পরীক্ষার সরঞ্জাম সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা, ভিন্ন কোনো জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁদের জন্য তো বটেই, এমনকি যেসব ব্যক্তির সর্বশেষ টিকা নেওয়ার মেয়াদ ছয় মাস পার হয়ে গেছে, তাঁদেরও করোনার টিকা নেওয়া উচিত।
আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করোনার বিস্তার ঘটার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আর জনসচেতনতার কাজটি করতে হবে সর্বস্তরে, সব খানে। প্রচারমূলক কাজে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ব্যবহার করতে হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও।