একের পর এক গান জনপ্রিয়তা পাওয়ায় মঞ্চেও ব্যস্ততা বেড়েছে কণ্ঠশিল্পী ও সংগীতায়োজক প্রীতম হাসানের। যার সুবাদে ডাক পেয়েছেন উত্তর অমেরিকা সফরের। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের বিদেশ সফর প্রীতমের জন্য একেবারেই আলাদা। কারণ, এবারের সফরে এক নাগাড়ে ২৫টি কনসার্টে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি; যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রীতম নিজেও। তাঁর কথায়, সংগীত ক্যারিয়ারে এই প্রথম আমেরিকা ও কানাডায় দীর্ঘ তিন মাসের কনসার্ট ট্যুর করছেন তিনি।
এক নাগাড়ে ২৫টি স্টেজ শো করে যাওয়ার বিষয়টি রোমাঞ্চকর। তাই চেষ্টা থাকবে প্রতিটি শোতে নিজের সেরা গায়কী তুলে ধরার মধ্য দিয়ে দর্শক-শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণের। প্রীতম আরও জানিয়েছেন উত্তর আমেরিকার সফরে তাঁর বড় ভাই কণ্ঠশিল্পী প্রতীক হাসানও বেশ কয়েকটি শোতে তাঁর সঙ্গে পারফর্ম করবেন। সব মিলিয়ে এই সফর স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত ৩১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে পারফর্ম করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে প্রীতমের উত্তর আমেরিকা কনসার্ট পর্ব। দ্বিতীয় কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ জুন নিউইয়র্কের লাগর্ডিয়া কলেজ পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে। ‘প্রীতম হাসান লাইভ ইন নিউইয়র্ক পাওয়ার্ড বাই রিভার’ শিরোনামে এই কনসার্ট আয়োজন করছে দেশি মিউজিক অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট এবং প্রিয়জন ফিল্মস্ ও টোস্টার প্রোডাকশন। আগামী ৩১ আগস্ট বাফেলোতে শো করার মধ্য দিয়ে উত্তর আমেরিকা সফরের ইতি টানবেন প্রীতম। মাঝের সময়টায় তিনি পারফর্ম করবেন নিউ জার্সি, লস অ্যাঞ্জেলেস, অস্টিন, হিউস্টন, মায়ামি, বস্টন, ওয়াশিংটন ডিসি, মিশিগান, আটলান্টা, সিয়াটল, সান হোসে, পোর্টল্যান্ড, টরন্টো, মনট্রিয়াল, ক্যালগেরিসহ বাঙালি অধ্যুষিত বিভিন্ন শহরে।
এদিকে প্রীতম হাসান যখন উত্তর আমেরিকা সফর নিয়ে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় দেশ নানা প্রান্তে শ্রোতা মনে অনুরণন তুলে যাচ্ছে তাঁর গাওয়া ‘তাণ্ডব’ সিনেমার ‘লিচুর বাগানে’ গানটি। এ ছাড়াও অনেক দিন ধরে শ্রোতার মুখে মুখে ফিরছে তাঁর গাওয়া ‘লাগে উড়াধুরা’, ‘চাঁদ মামা’, ‘দেওরা’, ‘মা লো মা’, ‘লোকাল বাস’, ‘বেয়াইনসাব’, গার্লফেন্ড্রের বিয়ে’সহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় গান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প র তম হ স ন কনস র ট প রফর ম প র তম
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরে ভারতীয় তরুণকে কেন মেঝেতে ফেলে হাতকড়া পরানো হলো
যুক্তরাষ্ট্রের নিওয়ার্ক বিমানবন্দরে এক ভারতীয় তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবি দেখার পর নড়েচড়ে বসেছে নিউইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেট। সেখানকার ভারতীয় কনস্যুলেট জানিয়েছে, এই বিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু যোগাযোগের পর কী জানা গেছে, এখনো তা অজানা।
গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের নিওয়ার্ক বিমানবন্দর থেকে কুনাল জৈন নামের এক অনাবাসী ভারতীয় ওই ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, পুলিশ এক তরুণকে মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরাচ্ছে।
কুনাল বলেন, সম্ভবত ওই তরুণকে নিওয়ার্ক থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। তরুণটির পরনে ছিল কালো পোশাক। তিনি কাঁদছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করছিল, যেন তিনি অপরাধী।
কুনাল জৈন পরপর একাধিক পোস্ট করেন। ভিডিও ও ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘তরুণটি স্বপ্ন ধাওয়া করে এসেছিলেন। কারও ক্ষতি করেননি। এক অনাবাসী হিসেবে নিজেকে অসহায় লাগছিল। আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল। এ এক মানবিক ট্র্যাজেডি।’
ভারতীয় দূতাবাস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে অন্য এক পোস্টে কুনাল লেখেন, ‘অসহায় এই ছেলেটির মা–বাবা জানতেও পারবেন না, তাঁদের ছেলের কী দশা হয়েছে। আমার সঙ্গে একই ফ্লাইটে তাঁর ওঠার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে উড়োজাহাজে তোলা হয়নি। তাঁকে দেখে দিশাহারা মনে হচ্ছিল। নিউ জার্সি কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে কী করেছে, সেই খোঁজখবর করা উচিত।’
ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘পোর্ট অথরিটি পুলিশ’ লেখা জামা ও টুপি পরা অবস্থায় দেখা গেছে। পোর্ট অথরিটি পুলিশ বিভাগ নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে ট্রানজিট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারা বিমান ও সমুদ্রবন্দর, বাস ও রেল টার্মিনাল, সেতু, টানেল ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা কাজ করে।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাব খুবই কঠোর। বহু দেশের বিরুদ্ধে সরকার ইতিমধ্যে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে সে দেশে যাওয়া কিংবা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও থেকে যাওয়া অভিবাসীদের সে দেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেসব নাগরিককে উড়োজাহাজের অভ্যন্তরেও হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে দেশে প্রতিবাদ হলেও ভারত সরকার কঠোর কোনো মনোভাব গ্রহণ করেনি। সংসদে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সে দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের উল্লেখ করেছিলেন। পরে নারী ও শিশুদের বিমানযাত্রার সময় হাতকড়া না পরিয়ে নিয়ে আসার কথা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছিল।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নতুন করে ট্রাম্প প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে, মনে করা হচ্ছে, ওই তরুণের প্রত্যাবর্তন তারই অংশ। কিন্তু সেটা যে মানবিকভাবেও করা যায়, কুনাল তাঁর ভিডিওতে সেটাই বলতে চেয়েছেন। এই বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ভারতীয় দূতাবাস নতুন কোনো আলোকপাত করতে পারেনি। তরুণটির পরিচয়ও জানা যায়নি।