সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে ফিরলেন চার বিটিএস তারকা
Published: 11th, June 2025 GMT
সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে এক দিনের ব্যবধানে বাড়ি ফিরলেন চার বিটিএস তারকা আরএম, ভি, জিমিন ও জাংকুক।
আজ বুধবার গিয়ংগি প্রদেশের ইয়নচন পাবলিক স্টেডিয়ামে ভক্তদের সামনে আসেন জিমিন ও জাংকুক।
কালো রঙের গাড়িতে চেপে সামরিক বাহিনীর পোশাকে মঞ্চে আসেন বিটিএস তারকারা। অনুরাগীরা তাঁদের অভিবাদন জানান, তাঁদের দেখতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তাঁরা ছুটে এসেছিলেন।
এ সময় উপস্থিত অনুরাগীদের উদ্দেশে জিমিন বলেন, ‘আপনারা অপেক্ষা করেছেন, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি মনে করি, আমরা যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে পারব। আমরা আরও ভালো কিছু প্রস্তুত করব আপনাদের দেখানোর জন্য।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্রাজিলিয়ান ভক্ত বলেন, ‘এটাই আমার প্রথম কোরিয়া সফর এবং এর আগে কখনো এই শহরের নামও শুনিনি, কিন্তু জিমিনকে দেখার জন্য আসতেই হলো।’
আরেকজন ইন্দোনেশীয় ভক্ত বলেন, ‘আমি খুব খুশি যে জিমিন নিরাপদ ও সুস্থভাবে ফিরে এসেছে। সে আমাদের কাছে ফিরেছে, এতে আমি আবার আনন্দে ভরে গেছি।’
কোরীয় তরুণদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৮ মাসের সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হয়। সামরিক বাহিনীতে আর্টিলারিম্যান হিসেবে কাজ করেছেন জিমিন। রাঁধুনির দায়িত্ব পালন করেছেন জাংকুক।
দীর্ঘদিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে জাংকুক বলেন, ‘অনেক দিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। একটু অস্বস্তি লাগছে এবং বুঝে উঠতে পারছি না, কী বলব।’
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পঞ্চম পদাতিক ডিভিশনে সক্রিয় সৈনিক হিসেবে ভর্তি হন জিমিন ও জাংকুক।
গতকাল মঙ্গলবার প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরেছেন আরএম ও ভি। সামরিক প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সুগা সামাজিক সেবাকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২১ জুন অবসর নেবেন।
১৩ ও ১৪ জুন গিয়ংগি প্রদেশে ‘বিটিএস ফেস্টা’র আয়োজন করছে বিটিএস। সেখানে সুগা ছাড়া অন্য সদস্যদের দেখা যেতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ট এস
এছাড়াও পড়ুন:
এ যেন এক অন্তহীন দুর্ভোগ
যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার বিষয়টি অনেক বছর ধরে প্রথম আলোর নিয়মিত সংবাদ শিরোনাম হয়ে আসছে। এ নিয়ে অনেকবার সম্পাদকীয়ও করা হয়েছে। রাষ্ট্র ও সরকারের নীতিনির্ধারণে পরিকল্পনাহীনতা ও সমন্বহীনতার অন্যতম দৃষ্টান্ত হতে পারে ভবদহের সংকট। টানা বৃষ্টির ফলে ভবদহের ৩০টি গ্রাম আবারও তলিয়ে গিয়ে চরম জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। দুর্ভোগ থেকে এ অঞ্চলের মানুষের কি মুক্তি মিলবে না কোনো দিন?
প্রতিবছর বর্ষা এলেই ভবদহ অঞ্চলের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। আর এবার তো জুলাই মাসের ২৭ তারিখেই বৃষ্টির পরিমাণ ৫১৪ মিলিমিটারে পৌঁছেছে, যা গত জুনের গড় বৃষ্টিকেও ছাড়িয়ে গেছে। ফলস্বরূপ, ৫২টি বিল প্লাবিত হয়ে সেই পানি উপচে পড়ছে আশপাশের গ্রামে। বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি ধর্মীয় স্থাপনাও রক্ষা পাচ্ছে না।
এ দুর্ভোগের মূল কারণ কী? ভবদহ অঞ্চলের পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা মূলত মুক্তেশ্বরী, টেকা, হরি ও শ্রী নদীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বছরের পর বছর ধরে পলি জমে এ নদীগুলো নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে পানি ধারণ ও নিষ্কাশনক্ষমতা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। ভবদহ পানিনিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালির অভিযোগ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মাত্র ছয়টি গেট খোলা রাখা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু না করলে এ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।
তবে আশার আলো বলতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কিছু উদ্যোগের কথা জানিয়েছে। আগামী আগস্ট মাস থেকে প্রায় ৮১ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু করবে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে ৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানিয়েছেন, জোয়ারের সময় স্লুইসগেটের বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করা হচ্ছে এবং ভাটার সময় গেটগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে।
নদী খনন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আমডাঙ্গা খালের সংস্কারকাজও দ্রুত শুরু হওয়া জরুরি। কিন্তু এ মুহূর্তে যে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন, তাঁদের তাৎক্ষণিক স্বস্তির জন্য কী করা হচ্ছে? ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের সব গেট খুলে দেওয়ার দাবি কেন পূরণ হচ্ছে না? টিআরএম চালুর বিষয়টি কেন এখনো উপেক্ষিত?
ভবদহের এ সংকটের বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সবাই ভালোভাবেই অবগত। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সবাই সে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ অঞ্চল নিয়ে নানা সময়ে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই এ অঞ্চলের সংকট নিরসন হয় না। ভবদহের কান্না কবে ফুরাবে, এটিই শুধু আমাদের প্রশ্ন।